প্রিয় হিরো ডন কিহোতোর নামের সহিত মিল রাখিয়া আব্বা তাহার নাম দিয়াছিলেন ‘ধন আহত’।
ছাব্বিশ বছর বয়সে ধন স্বপ্নে এউগগা কবিতা পাইল- “রাজ্য ত্যাগের প্রস্তাবগুলো কেমন যেন বৈধ মনে হয়”। ঘুম ভাঙ্গিয়া গেলে ধন কিছুক্ষণ স্পেলবাউন্ড হইয়া বসিয়া রহিল। ভাবিল এ কাহার বাল? ধুরো, কী কইতে কী কই… ধন স্বপ্নে পাওয়া কবিতাটির ছন্দ বিশ্লেষন করিয়া অভিভূত হইয়া গেল। এ নির্ঘাত দৈববাণী।
প্রেম ছিল, আশা ছিল টাইপ সিচুয়েশনে ধন গৃহত্যাগ করিল। তের ফার্মগেট, সাত গুলিস্তান পার হইয়া সে পৌঁছাইল এক কচুবনে।
কচুবনের প্রবেশ পথে এক মোরগ ঘুরে ঘুরে পণ্ডিতের মত প্রাণে নাচিতেছিল। ধনের নরম মন উথথলিয়া উঠে, ”কোন হাউয়ার নাতী তব এ অবস্থা করিয়াছে?” আলু-থালু পালকের পাখনা মেলিয়া কচুবনের দিকে ইঙ্গিত করিয়া “শ…” বলিয়াই মোরগ শেষ কার্বন ডাই-অক্সাইড ত্যাগ করিল। রক্তে ভেসে গেল জঙ্গলের টাইলস। রক্ত লাল, রক্ত লাল, রক্ত লাল। “শ… মানে? শ্রেণী শত্রু? কে? কচুগাছ?”, ভাবিয়া গগনবিদারী ডাক ছাড়িল ধন, “ বাঁ ধন ছেঁড়ার হয়েছে কাল”। আর কলম নিয়া কোপাইতে লাগিল কচুগাছদের। ব্যাকগ্রাউন্ডে বাজিতে লাগিল, কোপা শামসু কোপা” – গানটি। পেন ইজ মাইটিয়ার দেন সোর্ড- তাই, ধন গৃহত্যাগের সময় পেনই আনিয়াছিল সাথে।

কচুবনটি ছিল শিয়ালের আস্তানা। শিয়ালের দল আসিয়া কহিল, “হাউয়ার পো, তুমি আমাগো বাড়ীর বারোটা বাজাইতাছ কিল্লাইগা? আমরা হালা তুমার হোগা মারছিলাম নিহি? মারি নাইক্কা? পরের কাম যখন আগে করছ, তয় অহন আগের কাম পরে করি। হালার পো হালারে ধর।” ব্যাকগ্রাউন্ডে ভেসে আসিল পাইরেটস অফ দি ক্যারিবিয়ানের থিম মিউজিক। “ ইউ’ল রেমেম্বার দিস ডে এ্যাজ দি ডে, হোয়েন ইউ অলমোস্ট কট ক্যাপ্টেন শেখ স্প্যারো ”, বলিয়া একখান রামদৌড় লাগাল ধন। ৫ সেন্টিমিটারও যাইতে পারিল না। শত শত শিয়ালে তার গুয়া মারিতে লাগিল। রক্তাক্ত হল ধনের পোঁদ।
ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিকের দেবতা মস্করার লোভ সামলাতে পারলেন না, তিনি ‘মুক্কাবিলা,মুক্কাবিলা’- গানটি ছাড়িলেন। ধন ভাবিতে লাগিল, এযাবত কোন দেবতাই তার প্রতি মমতা দেখাল না, না বিদ্যার দেবতা, না গানের দেবতা, না গোলকিপিং এর দেবী, না প্রেমের দেবী, না ছবি আঁকার দেবী, না নাচের দেবতা, না কবিতার দেবতা- কেউ না? মায় ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিকের দেবতা পর্যন্ত না? অন্তত, ডিলানের ‘সিরিজ অফ ড্রিমস’টা বাজিলেও সে দাঁত খিচিয়ে হোগা মারার পেইনটা সহ্য করিত। হু হু করিয়া কাঁদতে লাগিল ধন। ধনের মনের কথা শুনিয়া, রক্তাক্ত পাছা আর অশ্রুসজল আঁখি দেখিয়া ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিকের দেবতার কিঞ্চিত খারাপ লাগিল। তিনি মুক্কাবিলা পাল্টাইয়া ‘নক নক নকিন অন হেভেনস ডোর’ এর গানস এন্ড রোজেস ভারশনটি চালাইলেন।
শিয়ালেরা বিদায় নিলে ধন উপতা হইয়া শুইয়া বিলাপ করিতে লাগিল। এবং যমদার কথা মনে পড়িল তার। বিপন্ন বিস্ময়ের চোদা খাইয়া আগেও যমদাকে ডেকেছে ধন। ধ্যানে বসিইয়া থুরি শুইয়া [গুয়ায় হায়রে ব্যাথা, শালার বসারও উপায় নাই], ধন গান গাইতে লাগিল। যমদাকে ডাকার গান। “যমদারে, তুহু মম শ্যাম সমান”, “এসো হে যমদা, এসো এসো” ইত্যাদি।
যমদা এলেন, খ্যাক খ্যাক করিয়া হাসিতে হাসিতে। “যমদা, [ফোঁত ফোঁত], গুরুজী, [উহুহুহু……] ,আমি আর পারছিনা, আমাকে মুক্তি দাও, [এ্যাঁ এ্যাঁ], জীবনের ভার আর বহন করতে পারছিনা, জীবনদা কোন চাইলের ভাত খাইতেন কে জানে, এত্তো ওজন, যমদারে, আমাকে মুক্তি দাও, ছুটি দাও- মৃত্যু দাও………দাও, দাও, দাও, দাও, [ফ্যাঁত-ফোঁচ-ইয়েএএএ]।”
যমদা বহু কষ্টে হাসি চাপিয়া কহিলেন, “লুক, আই রিয়েলি লাইক ইউ। আই লাভ ইউ মোর দ্যান আই ক্যান সে……। তুমি আমার অন্যতম প্রিয় কমেডিয়ান। মিস্টার বিন তো ট্যাকার তরে করে, তোমারটা অরিজিনাল, আর্ট ফর আর্টস সেক। শোন, লোক হাসানো বহুত সওয়াবের কাম, হগগলে পারে না। হাসলে নাকি হৃৎপিণ্ড ভাল থাকে। তোমাকে মানব জাতির খুব দরকার। তোমার কাজ হয়নিকো সারা। নট ইয়েট, নট ইয়েট……………”
বাঁচিবার তাড়না ফিরিয়া পাইল ধন। মনের ব্যাথার লগে লগে আশ্চর্যজনকভাবে গুয়ার পেইনও লাঘব হইল। সে কহিল, “যমদা, আমি বাঁচতে চাই। মরিতে চাহিনা আমি সুন্দর ভুবনে। গলিত স্থবির ব্যাঙের মত মুই আরো এক মূহুর্তের ভিক্ষা মাগি……”।
যমদা মিষ্টি হাসিয়া কহিলেন, “মাগী”।
আরো কইলেন,“শোন, স্বর্গ থেইকা আসার সম কবিতার দেবতা তোমার লাইগা এউগগা কবিতা আমার লগে দিয়া দিসিলেন –
আরো কিছুকাল ভাঁড়ামী চালাও,
নাচিয়া-কুদিয়া মাতাও জগত ।।
জরায়ুতে যেন না যায় বীর্য,
তব পোলা হবে সমান বলদ ।।
ভাঁড়ামীতে তুমি করিও প্রমাণ,
তব পৌরুষ-তুমি যে মরদ ।।”
“একটূ পুরুষতান্ত্রিক হইয়া গেল না বস?”, ধন মুখ পেতে শুধাইল।
“হাউয়ার পোলা, তর বাপে তর নাম রাখসে ধন …… আর তুই আমার লগে পুরুষতান্ত্রিকতা চোদাস? তুই অশ্লীল, তর চোদ্দ গুষ্টি অশ্লীল, পুরুষতান্ত্রিক।”
“সরি বস, ভুল হইয়া গেসে। ক্ষমাপ্রার্থী”, মিনমিন করিয়া কহিল ধন।
যমদা চলিয়া গেলেন। এবং ভাঁড়ামো কন্টিনিউ রাখিল ধন। লোক হাসানো অব্যাহত রাখিল। চারিদিকে LOL-LOL, ROFL-ROFL রোলে মুখরিত হইল। ধনকে তেমন কিছুই করিতে হইতো না, হয় না। সে হাসিলে লোকে হাসে, কাশিলেও হাসে, কাঁদিলে হাসে, পাদিলেও হাসে, সে যাই করে, তাতেই লোকে হাসে, যমদা হাসেন, ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিকের দেবতা ভি হাসেন। ধন আহত কিসিমের মধ্যবিত্ত পোস্টমর্ডান মিস্টার বিনেরা যতদিন রহিবেন, ভাত-কাপড়ের অভাব না গেলেও হাসির খোরাকের কোন অভাব হইবেনা বাঙালীর, বিশ্ববাসীর। আপসুস, ভাঁড়ামীতে নোবেল প্রাইজ নাই।