। আলেয়া জনম ।
শেষ সূর্যাস্তের সাথে সাথে-
ধুসর শালবনে ক্রমে ধূলিঝড় ওঠে, তাতে
হেমন্তশেষের পূর্ণিমায় বিভ্রান্ত বলিরেখাময় তোমার
মুখ, বিস্রস্ত বাতাসে বাতাসে।
নক্ষত্রের উদোম আলোয়, তরুণ ঘোড়ার
ঈষৎসোনালি কেশরে ঘনীভূত কুয়াশা কেটে যায়।
সন্ধ্যাকালে যে পথ বেয়ে নেমে আসো, এই
প্রত্নউপত্যকায়, তা তোমার আঘাত ধরে রাখে
আপন করে, জনপদে সুর ওঠে, ঈশানকোণ বেয়ে
আগত বাতাসে, সেই সুর হারানো নিউরনকুঠুরির
দেয়ালে দেয়ালে মিশে যায়।
বনশেষে সংলগ্নজলে
অরণ্য নত হলে, যে ছায়া পড়ে,
সে অশ্রুসরল আয়নায়, নিজেকে দেখো বেদনায় স্ফিত,
কপোল বেয়ে হ্রদের জল নোনা হল দেখো।
চেনো হে কিশোর, জলতলে এক শীতল শহর, ঘুমিয়ে আছে সহস্র
জন্ম ধরে, তোমার শিশুকাল জ্বলেনেভে দেখো। এই শীত
বিচ্ছিন্ন করে আত্মার সাইরেন তোলে, রিক্ত করে নিদ্রাতুর করে,
নির্জন জলপাই বাগানে সুর ওঠে শৈশবের, রাত্রির।
বিস্মিত হ্রদের সবুজে তুমি
শিক্ষিত হও, আর্ত হও গভীর তমসায়!
এই জলে প্রিয় পিতার ভস্ম, বিম্বিত রক্তের সন্ন্যাস; আত্মাহুতির
রূপালি আগুনে
জলের নিহিত অন্ধকার হতে অতিঅন্ধকারে, জমাট শিলার মাঝে
যে
অগ্নি, অপবিত্রতায় প্রোজ্জ্বল হাবিয়া; জমাট রক্তে পাক খায়
আদিপাপ!
দুর্গের স্থিতনীল মিনার,
ডানা ভাঁজ করে যখন নামলো
ক্লান্ত লুসিফার, তার উড্ডয়নকালও
পড়ে আছে স্রোতহীন জলতলে। দেখো
ঘুম ভাঙা আঠালো নেত্রে সেই সীমাহীন ডানার
বিন্যাস, ভোরবেলা কামনাবধির হৃদয়ে আনো সেই
লোহিত পাপের দোলাচল। অশ্বমেধের পরে, পিতার
অশ্রুতে স্নাত হও পথিক, নেমে আসো সেই নির্লিপ্তির
পাতালে, যাকে ঈর্ষা করেন এই জনপদের জ্ঞানী সন্তগণ।
রোববারে, প্রথম মেদুর ঘণ্টাধ্বনির সাথে
পপলার সারণি ছাই হয়ে গেছে। এসো, নামি
এই উপত্যকায়, হিমের রাত্রির সমান, বিচ্ছিন্ন অঘ্রাণে
ক্ষত-নিহত রূহের মন্দিরে-
বলিদান শেষে লীন হও কাঙ্ক্ষিত জলতলে,
তিনমুখো নেকড়ের প্রভু হয়ে, রোমশ নিদ্রায় নেমে যাও,
পিতার রক্তস্বেদে উষ্ণ শয্যায়, ডানার ভাঁজ ভেঙে শাশ্বত নিদ্রায়
নেমে যাও।
অযুত আদিম পাথরে,
ফোঁটায় ফোঁটায় জড়ো হতে থাকলো-
স্নিগ্ধ শুকনো গ্যামিট, প্লাজমা একাকী।
অনন্ত চাঁদের ছায়াতে তুমি নিদ্রা যাও…
এ ড ই ন ফি নি টা ম…


[ আজমাঈন তূর হক – কবি, পাঠক। লিরিসিস্ট হিসেবে যুক্ত আছেন ‘ইলোপ’ ব্যান্ডে। অহন পড়তাছেন রেসিডেন্সিয়ালে, এইচ এস সি প্রথম বর্ষে – নয় নাম্বার বাসের হেল্পারগণ ]