কারবালার গোলাপী আকাশ (প্যালিওজোয়িক পর্ব) – রবিউল আলম রবি

'গুলাবী আকাশ' - নিকোলাস রোয়েরিক, ১৯৩৩ ; প্রাপ্তিসূত্র - http://www.wikiart.org/en/nicholas-roerich/pink-sky-1933
‘গুলাবী আকাশ’ – নিকোলাস রোয়েরিক, ১৯৩৩ ; প্রাপ্তিসূত্র – http://www.wikiart.org/en/nicholas-roerich/pink-sky-1933

গুলমোহরের মৃত্যু

গোলাপ তোমার নামে ফুটেনা
গুলমোহর
চোখে চোখ রেখে খুঁজি তোমায়
গোলাপ শহর
অন্তর থেকে অনামিকায় কাঁটা ফুটেছে
গুলমোহর
ফুল ফুটেনি তোমার নামে, তুমিহীনা
গোলাপ শহর


কারবার-এ-কারবালা

১.
সন্ধ্যা তারা চুরি হলে
কোথায় গোপনে, গোলাপ বাগানে
ঝরা পাতার কান্না শুনে
পাথর ভাঙ্গা বৃষ্টি নামে

তাল কাটে জলমালা
লালে লাল কারবালা-

২.
লালচোখে-
আমার রক্ত নাই, তবু খুন
হয় আমার ফর্মালিন মাখা কাঁচাঘুম

৩.
তোমার ঘরে আমি থাকি
ফলে যে ঘর শূন্য থাকে
তাতে উড়ে বেড়ায় বিদেশি মাছি


কলা

[নুরুল আলম আতিক’কে]

‘এ সময়
আমাকে যে কলা দেয়
তাহার হলুদ খোসা ছাড়াইলে
খোসার ভিতরে যে সাদা পাথর
তা দিয়া শুধু পুটকি মারাই সম্ভব

আমি
খাইয়া না খাইয়া
ঐ কলা নামক পাথর
আমার শৈশবের গোপন ড্রয়ারে জমাইতেছি
সময়-সুযোগ হইলে
ড্রয়ারে লাগানো চাইনিজ তালার চাবি খুঁজতে বের হবো
তোমার লগে’


রিঙ্কন শিকদারের লগে ‘লাস্ট রাইড’

কানাগলির কানা কুত্তায় কান্দে
ওকে ফাইন, ওকে ফাইন

তিরিশ!
ধুর মিয়া গেলে চলো
দিমু বিশ

চুপচাপ ফার্স্ট লেন
চুপচাপ কমফোর্ট
চুপচাপ জিঞ্জিরা
চুপচাপ লেনদেন
চুপচাপ ভালোবাসা
চুপচাপ কানাঘুষা
চুপচাপ কানাগলি
চুপচাপ হাততালি
চুপচাপ কতোকিছু
চুপচাপ মাথাপিছু
চুপচাপ চুপিসারে
চুপচাপ ঝুলে পড়ে

কানা গলির কুত্তার গলায় মেটাল চেইন
হিজ মাস্টার ভয়েস কয়
‘আ’ম নট ফ্রাইটেন্ড অফ ডায়িং
কানা গলির কানা কুত্তা কান্দে
ওকে ফাইন, ওকে ফাইন


মধ্যরাতের চিঠি

রাত সোয়া দুইটা
কবিতা বাদ দিয়ে চারুলতা যখন অমলকে গল্প লেখার পরামর্শ দেয়
তখন মোবাইল ফোনে তার কল আসে

সে বলে
সিনেমাটা বন্ধ কর
কাগজ কলম নাও
কোন পাল্টা-প্রশ্ন অথবা প্রতি-উত্তর করবেনা
আমি যা যা বলি লেখ-

‘আমি শুধু মেয়েটিকে বাঁচাতে চেয়েছিলাম
বিপন্ন মেয়েটিকে তার বেডরুম থেকে
মৃত হাজবেন্ডের লাশের উপর দিয়ে উদ্ধার করে
ছুটতে ছুটতে ভুট্টার বনে নিয়ে এলাম
ছেড়ে দিলাম
এখন পলায়ন পর্ব
পালাও
পালাও
পালাও
দীর্ঘ পথ পার হয়ে ভুট্টার বন শেষ হয়
শেষ মাথায় একটা কুয়া
শত বছরের পুরনো কুয়া
মেয়েটিকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দাও
তামাম শোধ
এবার সামনে তাকাও
তরতাজা ঘোড়া লালন অপেক্ষমান
রাজন, ঘোড়ায় উঠো, তরবারি হাঁকাও
এবার ছুটে যাও
রাজ্য বিজয় হবে’

এবার পুরোটা পড়ে শুনাও
আমি মোবাইল ফোনে তাকে পড়ে শুনাই-

‘আমি শুধু মেয়েটিকে বাঁচাতে চেয়েছিলাম
বিপন্ন মেয়েটিকে তার বেডরুম থেকে
মৃত হাজবেন্ডের লাশের উপর দিয়ে উদ্ধার করে
ছুটতে ছুটতে ভুট্টার বনে নিয়ে এলাম
ছেড়ে দিলাম
এখন পলায়ন পর্ব
পালাও
পালাও
পালাও
দীর্ঘ পথ পার হয়ে ভুট্টার বন শেষ হয়
শেষ মাথায় একটা কুয়া
শত বছরের পুরনো কুয়া
মেয়েটিকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দাও
তামাম শোধ
এবার সামনে তাকাও
তরতাজা ঘোড়া লালন অপেক্ষমান
রাজন, ঘোড়ায় উঠো, তরবারি হাঁকাও
এবার ছুটে যাও
রাজ্য বিজয় হবে’

আমার হাতের লেখা স্পষ্ট ও সুন্দর
সেটা হয়তো সে জানেনা
হয়তো সে জানে
তবুও আরো স্পষ্ট
হয়তো আরো সুন্দরের জন্য
সে আমায় স্পষ্ট ও সুন্দর করে পুরোটা আবার লিখে
তার হাজবেন্ডের রিডিং টেবিলের উপর রেখে যেতে বলে।

'শিরিন ও খসরু' - নিকোলাস রোয়েরিক, ১৯৩৮ ; প্রাপ্তিসূত্র - http://www.wikiart.org/en/nicholas-roerich/shirin-and-khosrau-1938
‘শিরিন ও খসরু’ – নিকোলাস রোয়েরিক, ১৯৩৮ ; প্রাপ্তিসূত্র – http://www.wikiart.org/en/nicholas-roerich/shirin-and-khosrau-1938

IMAG0048[ রবিউল আলম রবি – চলচ্চিত্র নির্মাতা, লেখক। ]

মন্তব্য করুন

Fill in your details below or click an icon to log in:

WordPress.com Logo

You are commenting using your WordPress.com account. Log Out /  পরিবর্তন )

Facebook photo

You are commenting using your Facebook account. Log Out /  পরিবর্তন )

Connecting to %s