আসর
ক্ষয় হতে থাকা অন্ধকার দরজা
কড়া নাড়ার শব্দে মাতোয়ারা
কোলাহলখানায় ঘুমের আসর বসে।
মড়াজল
পোয়াতি ওক গাছটাকে
এক দিনভর্তি ছেলেধরা পায়।
সন্ধ্যার কলসে ভেসে
কিছু দিনপুকুরে নামে
কলাগাছসমপাতা।
কোরা ডুব খায়
ভুস করে ভেসে ওঠে
মড়াজল।
কবি
নিঃশব্দে গোপন থেকে
শব্দেরা—
উল্কি ফাঁস করে।
শহরে
আসে
হুলিয়া।
ঘুম
কেন যে ছিটকে যাই নখে
নক্ষত্রে—
ঘোড়ার লাগাম পরে।
সার্কাস বাতাসি বৃত্তে
প্রশমন লাটিম
ঘুরে
ঘুরে
জেরা করে
খুব।
স্বপ্নবাতি নিভিয়ে
সিদুরের সিন্দুক জ্বালি।
বন্ধক
সাতচল্লিশ সন থেকে
বাকুম বাকুম করছে
বন্ধকী পায়রা।
সাকিন হারানো
জমিদার
ঘামে রাজত্ব করে।
ব্ল্যাকবোর্ড
উৎসর্গঃ অভিজিৎ রায়
নিকষ ব্ল্যাকবোর্ডের শহরে
পৃথক কোন মুখ-পাত্র নেই সন্ধ্যা রাখার।
এই যে মৃত্যু বিধৌত পল্লী, জনজঙ্গল,
প্রপঞ্চ–
শিকার ও শিকারীর আলো ভাঙা প্রহর
সবকিছুর গহীনে ছাপিয়ে ওঠা নিঃশব্দ শীৎকারে
বেমালুম ঘুমিয়ে থাকা দু’পেয়ে
আদতে চোখ ওঠা ঢাকনার মত, জাগ্রত–
ব্ল্যাকহোল।
রটানো দুঃখের বণ্টন নামার পীঠে ঠেশ দিয়ে,
এই জনারণ্যে
ক্রন্দনের নিয়ম মাফিক ক্যালেন্ডারে
পৃথক কোন মুখে গাঢ় সন্ধ্যা ঢালতে
অপারগ।
ঝালটোস্ট
একটি ঘাটে তিনটি নৌকা বাঁধা ছিল
একটি মাঠে তিনটি ঘোড়া বাঁধা ছিল
এইভাবে শৈশবে
নামতা আমতা আমতা করে
শিখেছিলাম যার কাছে
সে শেখার পেছনে লোভ ছিল
দিদিমনির ঝালটোস্টের।
আমি শিখে নিতাম
স্লেটে আঁকা অ, আ, ই, ঈ …
দিদিমনির হাত ধরে চকে
ঘুরিয়েছি কত পৃথিবী!
অথচ এত ঘূর্ণনের গোপনে ছিল
এক লোভী ঝালটোষ্ট।
ইচ্ছে হয়, আবার শুরু করি
একটি ঘাটে তিনটি নৌকা বাঁধা ছিল
একটি মাঠে তিনটি ঘোড়া বাঁধা ছিল …
[ পাঠান জামিল আশরাফ – মানুষ। কথা, বলেন, লেখেন। ভাষা – বাংলা। – নয় নাম্বার বাসের হেল্পারগণ ]