অনেকদিন তোমার চিঠি পাইনা বাবা, অনেকদিন।
অনেকদিন তোমাকে চিঠি লেখিনা বাবা, অনেকদিন।
কলমের কালি ফুরিয়ে গিয়েছে বাবা।
আত্মজ আংরা (১)
জানালার শিক গলে আকাশ দেখার দিন
মাতিয়ে রেখেছিল আমায় মুগ্ধতায় অমলিন।
ধূসর আকাশে মেঘের গর্জন,
বিমুর্ত নগরীতে উদ্দাম বর্ষণ
ভালোবেসে কেটে গেল অফেরতযোগ্য শৈশব কৈশোর
ছোট্ট পিঁপড়ের পুঙ্খানুপুঙ্খ পর্যবেক্ষণে।
বৃষ্টি, কেবল বৃষ্টিই ভেজাতে পারে অভ্যস্ত কংক্রীটের বুক।
বৃষ্টি, কেবল বৃষ্টিই চেনাতে পারে আমার আমির মুখ।
আমি, কেবল আমিই পারি আমার কবিতা লিখতে।
আজন্ম সাধ ব্রাত্য আমার
তুচ্ছ কোন জানালার কাঁচে বৃষ্টি হয়ে ভিজতে।
অচেনা ল্যাম্পপোস্টের ভীড়ে মিলিয়ে যাওয়ার অন্তহীন
নেশায় হারিয়ে গিয়েছি আমি স্তব্ধতার অধ্বনীন।
অপিরিচিত আগন্তুকের অবাঞ্ছিত অন্বেষণ,
পরাজয় আর প্রত্যাখ্যানের অশরীরী আস্ফালন,
উর্ণনাভ উল্লাসে উপদংশের অন্তর্বাসে
গর্ভজ করেছে আমায় নৃবরাহের জঠরাগ্নির প্রাগৈতিহাসিক উদ্ভাসে।
রাত্রি, কেবল রাত্রিই জাগাতে পারে রাতুল প্রয়ানের সুখ
রাত্রি, কেবল রাত্রিই প্রজ্বলিত করে প্রকীর্ণ রতিকুহর;
আত্মজ আঙ্রা আজো বেদনায় নিশ্চুপ।
আত্মজ আংরা (২)
আমি তো তাকিয়ে আছি নির্লজ্জ প্রতি মুহূর্ত
তাতেও কি ভরছেনা মন?
কেন করতে হবে সুললিত ভ্রূভঙ্গি
অথবা ভীষণ চেনাজানা অনুকরণ?
ধ্রুবক নয় জেনো কাল্টের নবুয়্যাত।
কালের বৃষ্টি ধুয়ে দিল কত দার্শনিকের আঁকিবুঁকি।
শেষ সত্য অতি আবশ্যিক মৃত্যু;
বেঁচে থাকে কিছু ক্যালকুলেটেড ঝুঁকি।
প্রবাদ প্রবচন ভূয়োদর্শনের জাহাজে
তরুণ নাবিক নিতান্তই অপ্রয়োজনীয়।
অথবা সে আরো একটি ব্যর্থ গিনিপিগ;
যে প্রতিবাদ জানিয়েছিল প্রতিটি
মানবিক-অমানবিক এক্সপেরিমেন্টের বিরুদ্ধে।
অথবা সে সাদামাটা এক আদার ব্যাপারী,
যে কিনা পাবেনা জীবদ্দশায়
খুব বাস্তব জাহাজের খোঁজ।
গত রাত্তিরে হঠাৎ দেখি
সিলিঙয়ে লেপ্টে আছে সেই পুরনো টিকটিকি;
যাকে কিনা গত হেমন্তেই টুঁটি চেপে বিদায় জানিয়েছিলাম।
অবসান ঘটিয়েছিলাম একপেশে সাবলেটের।
আজ সে আবার ফিরে এসেছে,
গায়ে তার রঙিন হাওয়াই জামা।
বিনয়ী হেসে সে জানালো,
“শহরের ব্ল্যাডব্যাংক মোরে দিয়েছে উপহার রংধনু-লাল রক্ত”
তার দিকে চোখ তুলে তাকাতেই সে মুচকি হাসলো।
পুরোনো ডায়রির পাতায় বিবর্ণ হতে থাকে কিনু গোয়ালার গলি।
লিথিয়াম ব্যাটারি চুষে বেঁচে থাকা ক্যাননে আটেনা
ফেলিনির উন্মত্ততা, জহির রায়হানের অবারিত জীবন্ত মানুষের মুখ।
একজিমা আক্রান্ত হৃদয়ে জমে পুলিশ ব্যারাকের বাসন ধোয়া এঁটো পানি;
গোপনে পুষে চলি অস্তিত্বের অসুখ।
আমি তো তাকিয়ে থাকি নির্লজ্জ প্রতি মুহূর্ত
তবুও কেন ভরেনা তোমাদের মন?
জানো করবোনা সুললিত ভ্রূভঙ্গি
তবু কেন হায় পিছু ডাকো অকারণ?
অনিমিখে মেঘ দেখে,
উপভোগ করি শূন্যতা মাখা সুন্দর।
বয়োজ্যেষ্ঠের ঘামের টাকায় আহা এ কি বাবুয়ানা!
জানোনা কি তোমায় বাঁচিয়ে রাখে প্রোলেতারিয়েতের বন্দর?
টিকটিকিটার প্রাগৈতিহাসিক টিকটিক;
মাঝরাত্তিরে শুনি খুঁজে না পাওয়া হাতঘড়িটার
এক মিনিটের নীরবতা ভাঙা মনোফনিক অ্যালার্ম;
এরপর শুনি নাগরিক কিছু ঘেউ ঘেউ;
শব্দের ভীড়ে আজীবন জানি শব্দের হয় নিলাম।
বিক্ষিপ্ত কিছু কোলাজে অংশ নেয়
শত তরুণের আদিম ফ্যান্টাসি;
প্লেটো মরলেও শহরে গজিয়ে ওঠে
ইট-কাঠ-চুন-সুড়কিতে মোড়া নিওপ্লেটোনিক গুহা।
বাজারে বিকোয় মরিসন আর মেদময়ী পাশাপাশি।
অবশেষে ভোর হয়।
সুর্য মাখে জুনাইমনের নির্ঘুম রাতের প্যারাডক্স।
শিশিরে জমে জনকের গত হাসি।
ডান চোখে মোর সহস্রাব্দের কুয়াশা;
বাম চোখে মহাপৃথিবীর আলো পুষি ।
আত্মজ আংরা (৩)
কাকেরা নিজেদের অজান্তেই সিনেমার জন্ম দেয়।
ওরা জানেনা আমার তৃষিত চোখের হদিশ।
আমি প্রতিনিয়ত দেখি ওদের।
কখনো ওরা চারপাশে ছিটিয়ে থাকা
নাগরিক ছাঁদের খুঁটিতে বসে থাকে।
কখনোবা নিজেকে লুকোতে চায় সবুজ পাতার ক্যামোফ্লেজে।
তখন ওদের ভীষণ আপন মনে হয়।
ওরা তো আমার মতই
মহাকালের পথে শূন্যে বিলীন।
কাকেরা নিজেদের অজান্তেই জন্ম দেয় মন্তাজের।
ছাইচাপা কালো রঙ আর নিজেদের মৌলিক ধ্বনিতে
কাকেরা জন্ম দেয় সেই প্রাগৈতিহাসিক মন্তাজের;
যে মন্তাজে মিশে আছে
পৃথিবীর প্রথম বাইসনের রক্তে বয়ে চলা গতিময় মাদকতা।
কাকেরা নিজেদের অজান্তেই আমাকে দুঃখী করে তোলে।
নিজের স্ববিরোধে নিজেই চমকে উঠি।
অবিরাম ব্যাখ্যা বদলে যায় ঘটে চলা সব ঘটনার।
অতলে মৃত্যু আর শিখরে জন্মের কচুরিপানা বুকে
বয়ে চলা নদীতে নিজেকে এক রুপোলি মাছ মনে হয় আমার।
আমি প্রতিদিন আটকে পড়ি কুবেরের জালে;
বিক্রি হই পান্টির বাজারে।
আমায় কিনে আনে হামিদুল অথবা কৃষ্ণকায় এক কিশোর।
তারপর আমাকে কেটে ফেলে মাজুর বটি।
অথচ কি অবাক কাণ্ড!
মাজুর বটি আমার রক্ত ঝরাতে পারেনা।
বরং আমার ধারেই খণ্ডিত হয়ে যায় সে।
মাজু আমাকে কোলে তুলে নেয়।
পরম আদরে সে আমাকে ছেড়ে দিয়ে আসে হামিদুলের পুকুরে।
অতঃপর…
রাস্তার ধারে গোরস্থানে আমি আবার বেড়ে উঠি।
টের পাই মাছ থেকে আমি
এযাত্রায় পরিণত হয়েছি প্রকাণ্ড এক বট গাছে।
যার শিকড় ছড়িয়ে পড়ছে কোন এক মানবের হৃৎপিণ্ডে।
যে মানবের কংকালে জীবদ্দশায় বাসা বেঁধেছিল-
অপরিমেয় অপত্যপ্রেম আর নিরাভরণ আবেগ।
যে মানবের ইউনিফর্ম খোলা দেহের ঘামে ছিল
অ্যান্টার্কটিকা-শীতল প্রাণ জুড়ানো বরফ-ঠাণ্ডা পরশ।
যে মানব ছিল রীতিমত সাধারণ, প্রান্তিক, গড়পড়তায় অসাধারণ
এবং মানবিক।
যে মানব হয়তো নিজের অজান্তেই রচনা করে গিয়েছে
পাঁচটি মুর্তিমান এপিটাফের।
যে এপিটাফে যুগপৎ বাসা বাঁধে-
বহমান জীবনের প্রত্যাশা আর
পার্থিব দায়বোধের প্যারাসুট।
নিহিলিজমের অবারিত এপিফ্যানি।
যে মানবের শিরদাড়ায় ছিল জীবনের দাসত্ব;
যে দাসত্বই তাকে দাস থেকে পরিণত করেছিল
সুবিশাল এক সূর্যে।
যে সূর্যকে ঘিরে আবর্তিত হয়েছিল-
কোন এক মানবীর দারুণ কিশোরীবেলা;
জীবনব্যাপী সংগ্রামের একক-কোরাস।
যে সূর্যের তাপে আমৃত্যু জ্বলেছিল
মহাপৃথিবীর বুকে জ্বলতে থাকা আত্মজ এক আঙ্রা।
যে আঙ্রায় পুড়ে হত ছাই
কালপুরুষের উল্লাস।
মানব!
তোমার ইউনিফর্ম খোলা দেহের ঘামে ছিল
অ্যান্টার্কটিকা-শীতল প্রাণ জুড়ানো বরফ-ঠাণ্ডা পরশ।
নিজের অজান্তেই তুমি রচনা করে গিয়েছো
পাঁচটি মুর্তিমান এপিটাফের।
যে এপিটাফে যুগপৎ বাসা বাঁধে-
বহমান জীবনের প্রত্যাশা,
পার্থিব দায়বোধের প্যারাসুট।
নিহিলিজমের অবারিত এপিফ্যানি।
মানব!
আমি তোমার গল্প জানি।
আত্মজ আংরা (৪) অথবা পুনরায় সুরতহাল
আর মাত্র দুহাত।
বুক ঘষটে ঘষটে এতদূর যখন আসতে পেরেছি
আরো দুহাতও নিশ্চয় আমি পারবো।
পারবো কি?
না পারলেও খুব বেশি আসবে যাবেনা
পেছনে ফেলে আসা মহাপৃথিবীর।
সময়ের প্রথম কালাংড়া কানে আসতেই
আমি আদিম উল্লাসে ছাড়িয়ে যেতে
চেয়েছিলাম ন্যাড়া মাঠের সীমানা।
অথচ সবুজ দুর্বার রসে ভেজবার আগেই
তিতির-রক্তে তিতল হল মম মৃত্তিকা-ওষ্ঠ।
পেছনে ফেলে এসেছি বাম কানের গলে যাওয়া অংশ।
মাঝপথে আসতেই টের পেলাম ডান পায়ের
বুড়ো আঙ্গুলটুকু উধাও হয়ে গেছে।
খুব বেশি অবাক হলাম না।
বরং একটা চাপা আনন্দ পেলাম।
ভীষণরকম কড়া পড়ে গিয়েছিল বুড়ো আঙ্গুলে।
প্রতি রাত্তিরে টাওয়ারের মাথায় জ্বলতে থাকা
লাল আলোগুলোকে একে একে চুরি করে যখন
নিজের ছোট্ট গুহায় ফিরে এসে
পা ডুবাতাম কয়েদীদের থেকে চেয়ে আনা
দুমাসের গরম পেচ্ছাবে,
তখন নখ দিয়ে খুটে খুটে
খসখসে শক্ত চামড়াগুলোকে তুলতে
অলস এবং বিরক্ত লাগতো আমার।
কতবার ভেবেছি জননী যেভাবে সুপুরি কাটে,
আমিও কেটে ফেলবো অসহ্য নির্লিপ্ত এই বুড়ো আঙ্গুলকে।
তা নিজে যখন পারিনি,
নিজ থেকে সে খসে গেলেই বা মন্দ কী?
আর মাত্র দুহাত।
বুক ঘষটে ঘষটে এতদূর যখন আসতে পেরেছি
আরো দুহাতও নিশ্চয় আমি পারবো।
কিছু রাত্তিরে আমার দেখা হত
নাগরিক আফ্রোদিতিদের পিতাদের সাথে।
তারাও নিজেদের ক্রমাগত নিলামে তুলতেন।
প্যারাফিনে মোড়া চাঁদর জড়িয়ে তারা
পায়চারি করতেন শহরের বুকে।
যারা নিলামে বিকিয়ে যেতেন তাঁদের আর দেখা যেতোনা।
অবশিষ্টরা ফযরের আজান হতেই
পকেট থেকে বের করা
পাতলা সুতোর সাদা টুপি মাথায় চড়িয়ে নিতেন।
কেরানীর চরম নিষ্ঠুরতার শিকার হত যেসব মাছি,
তাঁদের সাথেও আমার বেশ জমতো।
বমি-খাওরা মাছিদের অতটুকু শরীরে
যুগান্তরের নির্যাতনের দাগ দেখে শিউরে উঠতাম।
সিদ্ধান্ত নিলাম,
অ্যানাটমিতে সাপ্লি খাওয়া
কিছু মফঃস্বলের গন্ধ মাখা তরুণ অথবা
ঘামের গন্ধ পারফিউমে লুকোনো কিছু তরুণীর বদলে
দেহটা বরং মাছিরাই ইজারা নিক।
বিনিময়ে কিছু মাছিকে আমি মমি হিসেবে
লুকিয়ে রাখবো ধূসর পাণ্ডুলিপির ভাঁজে।
শহরের সবথেকে পুরোনো ল্যাম্পপোস্টটার যক্ষ্মার
খবর পৌর কর্তৃপক্ষ ধামাচাপা দিয়ে রেখেছে।
কতশত ফাইল চালাচালি হচ্ছে,
অথচ বেচারা বুড়ো ল্যাম্পপোস্টটার ব্যাপারেই কিছু হচ্ছেনা।
পেনশনের টাকাটা পর্যন্ত পায়নি সে।
যত্তসব পেটি বুর্জোয়া শবখেকোর দল!
ল্যাম্পপোস্টটাও তেমনভাবে আদর্শ প্রোলেতারিয়েত।
বুড়ো ল্যাম্পপোস্ট পেনশন পায়না।
কত শত ককুরের উষ্ণ দেহজল আর
মনুষ্য-দন্তে পিষ্ট হওয়া পানের পিকে
আজ তার শরীরে জন্ম নিয়ে চলে
প্রাগৈতিহাসিক গন্ধ ছড়ানো ঘা।
সে ঘায়ে মলম লাগানোর কেউ নেই।
রাতভর সে চুলকে মরে নিজের রংচটা শরীর।
মাঝে মাঝে অলস দুপুরে একদল শিশু
তাকে লক্ষ করে ইট ছুড়ে মারে।
কোনটা তার শিশ্নে,কোনটা বা পাঁজরে আঘাত করে;
কোনটা বা তাকে এড়িয়ে বাতাসের বুক ফুড়ে লুটিয়ে পড়ে
পাশের পুরনো নর্দমায়।
নর্দমার ইতিহাসের স্রোতে তারা ঠায় পায়।
আহা!
স্যাডিস্ট শহরে ধর্ষিত ল্যাম্পপোস্ট,
কাশির দমকে নিভে নিভে জ্বলে আলো।
আর মাত্র দুহাত।
বুক ঘষটে ঘষটে এতদূর যখন আসতে পেরেছি
আরো দুহাতও নিশ্চয় আমি পারবো।
পারবো কি?
সে কি!
এখনো আমি অসাড় পড়ে রইলাম।
বাখ,চপিন আর রবি শংকরে বুঁদ হয়ে
কতক আগেই না আমার পৌছে যাবার কথা ছিল কাঙ্ক্ষিত বন্দরে।
অথচ,
বুক ঘষটে ঘষটে আমি কিনা এখনো পড়ে রইলাম
এই অন্ধকার সুড়ঙ্গে।
এই অন্ধকার সুড়ঙ্গে।
এই অন্ধকার সুড়ঙ্গে।
আর মাত্র দুহাত।
আর দুহাত পেরুলেই আমি জানি,
অপেক্ষা করছে একাত্তর অথবা
ভিয়েতনামে হারিয়ে যাওয়া রমনী।
আর মাত্র দুহাত।
আর দুহাত পেরুলেই আমি জানি,
আধপোড়া সিগারেট হাতে,
মাঠের শিশিরে শরীর ভিজিয়ে অপেক্ষায় আছে
সময়ের প্রয়োজনে হারিয়ে গিয়েছে যে তরুণ।
দেয়ালে পাকসেনার আর হৃদয়ে নিজেদের মৃত্যুর
ট্যালি কেটে যে তরুণ হারিয়ে গিয়েছিল করুণ।
যার ডায়েরি আমি ফিরিয়ে দেবো বলে এসেছি এতটা দূর।
আর দুহাত যে আমাকে যেতেই হবে।
পারবো না আমি?
পারতে আমাকে হবেই।
কর্নেল কার্টজ এর ফসিলটাও ফিরিয়ে দিতে হবে তার ছেলেকে।
ছেলেটা নিশ্চয় এখনো ভোলেনি তার জনকের মুখছবি।
আর যদি খুঁজে পাই কামুকে তবে তাকে পৌছে দেব
ম্যোরসের শেষ চিঠি।
অতঃপর,
এত কিছু ফিরিয়ে দেওয়ার বদলে
আমি কি কিছুই চাইবোনা?
চাইবো বৈকি…
এত কিছু ফিরিয়ে দেওয়ার বদলে
আমি শুধু পুড়ে যেতে চাইবো
পিতার শেষ উচ্চারণে বেরিয়ে আসা বাতাসের উষ্ণতাটুকুয়।
আমার পুরাণের শেষ উষ্ণ নিঃশ্বাস।
আর মাত্র দুহাত।
বুক ঘষটে ঘষটে এতদূর যখন আসতে পেরেছি
আরো দুহাতও নিশ্চয় আমি পারবো।
ফিরেও আসবো আবার বুক ঘষটে ঘষটে।
ফিরতি যাত্রায় পিঠে বয়ে আনবো
পিতার শরীর থেকে গজিয়ে ওঠা প্রাচীন নাক্ষত্রিক ঘাস।
আমার সাথেই আত্মজ আংরায় পুড়ে ছাই হবে ওরা।
সেই ছাই শরীরে মেখে চিরকালের জন্য ধূসর হয়ে যাবে
মহাবিশ্বের আগত সময়ের আকাশ।
কিছু সুন্দর ভয়ানকভাবে সেপটিক।

[ সাব্বির পারভেজ সোহান – সিলেট থাকেন। এইচ এস সি দিয়েছেন এম সি কলেজ থেকে। কবিতা আর সিনেমা ভালবাসেন। – নয় নাম্বার বাসের হেল্পারগণ ]