নিরুপায় – আল-বিরুনী প্রমিথ

উইকেটে আসতে না আসতেই ব্যাট দিয়ে স্বভাবসুলভ ভঙ্গিতে পিচের ফাটা অংশগুলোকে ভরাট করবার নিস্ফল চেষ্টা করতে করতে রাসেল বললো, “শফিক ভাই, হুদা ভাই নামার আগে আমারে কইলো আপনি যেন এখন থেইকা হাত খুইলা খেলেন তা আপনারে জানাইতে। এখন তো প্রতি ওভার সাতের কাছাকাছি চইলা গেছে রানরেট। আপনি মাইর শুরু না করলে আসাদ, বিল্লা, মাসুম ওদের উপরে অনেক চাপ হইবো। আর শেষের দিকে বিকাশ চার ওভার বল করবো শিউর। আপনি যেমনে তারে খেলতে পারবেন আসাদ, বিল্লারা তেমনে পারবোনা”।

ইনিংসের আর আছে সতেরো ওভার।

একশো বারো রান লাগবে ওয়ারিয়র্স ক্লাবের ম্যাচটি জিততে।

ইনিংসের মাঝখানে দ্বিতীয় বিরতিতে ঘর্মাক্ত হয়ে যাওয়া গ্লাভসজোড়া বদলাতে বদলাতে রাসেলের ইন্সট্রাকশনগুলো ধীরস্থিরভাবে শুনলো শফিক। আজকে নামার পর প্রথম থেকেই বলগুলো ঠিকভাবে মিডল করতে পারছেনা। দুইবারের মতো এলবিডব্লিউয়ের জোরালো আবেদন উঠেছিলো তার বিরুদ্ধে। একবার বিকাশের বলে, পরেরবার সৈয়দের বলে। হাইটের কারনে উভয়বারই সে বেঁচে গেছে।

একবার বল স্লিপে দাঁড়ানো মইনুলের উপর দিয়ে চলে গিয়ে ট্রিকি একটা বাউন্ডারি পেয়েছে বটে সে কিন্তু এখনো পর্যন্ত তার চল্লিশ রানের ইনিংসটি আদৌ কনভিন্সিং নয়। অন্যরা বাদই থাকুক সে নিজে কি বোঝেনা? তাই কোচ হুদা ভাইয়ের উপদেশগুলো রাসেলের কাছ থেকে শুনে সে চুপচাপ দাঁড়িয়ে মাথা নাড়ে। হেলমেটের পেছনটা সেই কখন ঘামে ভেজা হয়ে চুলগুলো তরল এক স্বাদ পেয়েছে। হেলমেট খুলে তাই পানি দিয়ে একবার সমগ্র মাথা ভেজালো। আজকে তাপমাত্রা সকাল থেকেই চড়া। তেত্রিশ কি চৌত্রিশ ডিগ্রী সেলসিয়াস হবে। শফিক সমগ্র শরীরে আশ্চর্য শীতলতা অনুভব করে। আজকের দিনে প্রথমবারের মতো।

গত এক মাস ধরেই তার মনের ভেতরে কতো বিচিত্র রকমের ঝড় বয়ে যাচ্ছে তার খবর কাউকেই এখনো পর্যন্ত জানায়নি। এমনকি মাকেও নয়। নিজের অনুভূতি দিয়ে সে উপলব্ধি করেছে – যেসকল সংকটের মুখোমুখি হয়ে তার বর্তমান অবস্থা টালমাটাল, তার কাছে যদি মাথা নত করতে না হয় তবে সমস্ত ভার তাকেই নিতে হবে। স্রেফ তাকেই। শফিক বেশ কয়েকবারই নিজের এই সিদ্ধান্ত সম্পর্কে নিজেকেই প্রশ্ন করেছে। নির্মোহভাবে। অক্ষমতা থেকে উৎসারিত পাতি মধ্যবিত্ত জাতীয় কোন সেন্টিমেন্টে দ্বারা তাড়িত হয়েই এমন সিদ্ধান্ত নেয়নি তো? নিজের প্রতি সংশয়ের দরজাটা সবসময়েই সে খোলা রাখতে সচেষ্ট বলে কখনো কখনো সঙ্গত কারনেই প্রশ্নটির উত্তরে নিজের মধ্যবিত্ত সত্তার প্রবলতাকেই অনুভব করেছে। কিন্তু গতো পরশুর পর থেকে সে নিশ্চিত হয়েছে। না, যেই সকল আপাত অনতিক্রম্য সংকটগুলোর মুখোমুখি সে দাঁড়িয়ে নিজের ভবিষ্যতের আর্কিটেক্ট হবার চূড়ান্ত পর্যায়ে উপনীত হয়েছে সেগুলোর সমাধান একমাত্র তাকেই করতে হবে।

শফিক রাসেলের মুখের দিকে তাকায়। স্পষ্টভাবে। চাহনীর সকল দ্যুতি নিয়ে। যেন এক দেখায় রাসেলের ভেতরের সমগ্রটুকু পড়ে নেবে। রাসেল অগ্রজের এই চাহনীর সাথে পূর্ব পরিচিত। কখনোই এই দৃষ্টির সামনে সে সহজ হতে পারেনা। এখনো পারলোনা। চোখ নামিয়ে নিলো।

শফিক যা বুঝতে চাইছিলো তার সবই বুঝতে পারলো। কিন্তু রাসেলের উদ্দেশ্যে একটা কথাও বললোনা। সে জানে এই সময় রাসেলের উদ্দেশ্যে একটি মাত্র সবল উত্তরই তার দেওয়ার আছে যার নাম মৌনতা। বদলানো গ্লাভসজোড়া হাতে ঢুকিয়ে রাসেলের হাতে একটা মৃদু পাঞ্চ করলো। খেলা আবারো শুরু হবার পথে।

শফিক নন-স্ট্রাইকে।

প্রশস্ত কাঁধজোড়া, তীক্ষ্ণ চোখের সুদীপ বল হাতে নিয়ে প্রায় চল্লিশ গজ দূরত্ব থেকে ছুটে আসবে। তার কাছে কাটার, স্লোয়ার, ইয়র্কার, বাউন্সার থেকে শুরু করে সব ধরণের অস্ত্রই মজুদ আছে যা একজন ফাস্ট মিডিয়াম বোলারের থাকতে হয়।

চৌত্রিশ ওভারের প্রথম বলটাই সুদীপ করলো গুডলেংথে। রাসেল এই ধরণের ডেলিভারীতে অন্ততপক্ষে সিঙ্গেল নিয়ে শফিককে স্ট্রাইক দেওয়ার মতো ব্যাটিং জানে। তাই করলো। ডিপ স্কোয়ার লেগে বল যেতে যেতেই শফিক নির্দ্বিধায় স্ট্রাইকে চলে আসতে পারলো। সে দেখতে পেলো সে ক্রিজে আসতেই ফাইন লেগ সার্কেলের ভেতরে চলে এসেছে। লেগ সাইডে এখন তিনজন খেলোয়াড় একেবারে বাউন্ডারির শেষ প্রান্তে। ডিপ স্কোয়ার লেগ, ডিপ মিড উইকেট এবং লং অন। শফিক জানে এই পরিস্থিতিতে কি ধরণের সম্ভাব্য ডেলিভারির মুখোমুখি তাকে হতে হবে।

শুধু কি ক্রিকেট ম্যাচে? ব্যক্তিগত জীবনের প্রায় প্রতিটি ক্ষেত্রতেই তাকে বাউন্সার সামলাতে হচ্ছে। পরশুদিন অনেক সময় ধরে রেফায়ার সাথে ধানমন্ডি লেকে গাছের নিচে বসেছিলো। কথায় কথায় প্রায় শেষেরদিকে এসে রেফায়া তাকে জানিয়েছে যে শফিকের ক্লাবের প্রেসিডেন্টের ছেলে আকাশকে তার এখন আর খারাপ লাগেনা। শফিক প্রাণপণে শান্ত থাকবার চেষ্টা করে।

“আকাশ ভাইর সাথে তোমার অনেকদিন তো হইলো কথাবার্তা হয়। তোমাদের দেখাসাক্ষাৎ হয়না?”

রেফায়া নিষ্পৃহ, যেন কিছুই হয়নি, যেন ঘটমান সকল কিছুই স্বাভাবিক এমন ভঙ্গিতে কলকল করে উঠেছিল, “না, আমাদের দেখা হবে ক্যান? আকাশ ভাই মাঝেমাঝে আমারে ফোন দেয়। জানো আকাশ ভাই দশদিন আগে একটা ডিএসেলার কিনছে। আমারে বলছে আমার অনেক ছবি তুলে দিবে”।

শফিক সাথে সাথে বুঝেছে নিজের অসহনীয় বেকারত্বের অসহনীয়তা শুধুমাত্র তার নিজের, জনক-জননীর সাথে তার সম্পর্কের উপরেই পড়েনি, রেফায়ার সাথে তার সাড়ে ছয় বছরের সম্পর্কেও পড়তে শুরু করেছে। বাস্তববিমুখতা কোনকালেই তার বৈশিষ্ট্যের অন্তর্গত নয়। সংকটাপূর্ণ সময়ের ছায়ার মাঝে নিজেকে দেখার যেই বিবমিষাকর অনুভূতি তার সামনে দাঁড়িয়ে এই জাতীয় স্যাঁতসেঁতে কিছুর কাছে পরাজিত হলে নিজের উপরেই তীব্র ঘৃণা চলে আসবে। রেফায়ার সাথে তার সম্পর্কের ভবিষ্যত, নিজের পরিবারের সাথে তার সম্পৃক্ততা সর্বোপরি হৃদয়বৃত্তিক সমস্ত বিষয়কে একদিকে সরিয়ে রেখে সে পরবর্তী ম্যাচটির জন্য নিজেকে প্রতিটি দিক থেকে প্রস্তুত করতে চায়। শরীরে। মনে।

সুদীপের হাতের দিকে চোখের সমগ্রতা ঢেলে দিয়ে লক্ষ্য করলো। যা ভেবেছিলো, তাই। ভাবনাটা অনিবার্য হয়ে উঠলো। বাম কাঁধ বরাবর ছুটে আসা বাউন্সার। ফাইন লেগ যেহেতু সার্কেলে তাই সেদিকে ব্যাট ঘোরালে নিশ্চিত চার, টাইমিং ভালো হলে ছয় রানও হয়ে যেতে পারে। শফিক নিজের স্ট্যাম্পগুলো উন্মুক্ত করে দিয়ে ব্যাট ঘোরায়। কিন্তু যেই দিক দিয়ে বলকে বাউন্ডারিতে পাঠাতে চেয়েছিলো বল সেই বরাবর যায়না। নিজের চোখজোড়ার প্রতি সম্পূর্ণ অবিশ্বাস নিয়ে শফিক দেখলো ডিপ স্কোয়ার লেগের ফিল্ডার ক্যাচ ধরবার জন্য নিজেকে প্রস্তুত করতে শুরু করেছে। এমন অবস্থায় শরীরের প্রতিটি অংশকে হালকা করে ফেললে ক্যাচ ধরা অনেকটাই সহজ হয়ে উঠে। ফিল্ডার তাই করলো। নিজের শরীরটকে পাখির পালকের মতো হালকা করে সে তার দিকে আগত বলে জন্য অপেক্ষা করছে।

কিছু কিছু মুহূর্ত আসে, নিজস্ব অনিবার্যতা নিয়ে। যার মুখোমুখি মানুষ সচরাচর হতে চায়না বটে কিন্তু সামনে তাকে দাঁড়াতেই হয়। তারপরে তার অনেক স্বপ্ন, সাধ, সংকল্প, ইচ্ছা, প্রতিজ্ঞা ভেঙ্গে দুই টুকরো হয়ে যায়। সেই মুহূর্তটি চলে এসেছে এই আতঙ্কে শফিকের চোখের পাতা বন্ধ হয়ে যায়।

চারপাশটা কতক্ষণ নিস্তব্ধ ছিলো? শফিক বলতে পারেনা।

“শফিক ভাই, দৌড়ান”। তার উদ্দেশ্যে রাসেলের চিৎকার শফিকের কাছে গগনবিদারী ঠেকে। নিজের সমস্ত ইন্দ্রিয়ের প্রতি চূড়ান্ত অবিশ্বাস নিয়ে শফিক দেখতে পায় ফিল্ডার ক্যাচটি ফেলে তো দিয়েছেই রাসেল সেই সুযোগে এক রানের জন্য তার প্রান্তে চলে এসেছে। শফিক মরিয়া হয়ে দৌড়াতে আরম্ভ করে। অপর প্রান্তে পৌঁছে এক রান সম্পন্ন করতে তার প্রায় নাভিশ্বাস উঠবার উপক্রম হয়।

নিশ্চিত ক্যাচ মিস হয়ে গেছে, রান আউট হবারও একটা সম্ভাবনা ছিলো। তাকেও কাজে লাগানো গেলোনা। সেই রাগেই কিনা বোলার, অধিনায়ক স্কোয়ার লেগের সেই ফিল্ডারকে সেই স্থান থেকেই সরিয়ে দেয়।

তারপরের কিছু ওভারে শফিক নন-স্ট্রাইকিং এন্ডে থেকেই যা দেখতে পেলো তাকে সর্বনিম্ন যদি কিছু বলা যায় তবে তা হলো মিনি তাণ্ডব। রাসেল ছেলেটা নিজের একান্ত যা কিছু কথা আছে প্রায় সবই শফিক ভাইয়ের কাছে এসে বলে। সেই অন্তরঙ্গতার সূত্রেই শফিকের জানা হয়ে গিয়েছিলো রাসেলের প্রাইমা্রি স্কুলের শিক্ষক বাবা প্রাপ্য বেতন থেকে নিজের বঞ্চিত হবার ক্ষোভেই কিনা কে জানে আদরের ছোট ছেলেকে মারধর করে ফাইনাল আল্টিমেটাম দিয়েছে। হয় ক্রিকেট খেলার পেছনে সময় ত্যাগ করতে হবে নয়তো ঘর ছেড়ে অন্যত্র কোথাও নিজের থাকা-খাওয়ার বন্দোবস্ত করতে হবে। মাঝামাঝি আর কিছু নেই। সেই জেদ থেকেই কিনা কে বলতে পারে রাসেল ইনিংসের শুরু থেকেই আজ তীব্র মারমুখী হয়ে খেলছে। শফিকের বল মিডল করতে ব্যর্থ হওয়াটাও এর অন্যতম এক অনুঘটক।

দেখতে দেখতে একচল্লিশ ওভার পেরিয়ে গেলো। ওয়ারিয়র্স ক্লাবের স্কোর দাঁড়ালো পাঁচ উইকেটে একশো তিরাশি। আস্কিং রেট এসে দাঁড়িয়েছে সাড়ে পাঁচের মতো। শফিক ওভার শেষে রাসেলের সামনে এসে তার দিকে আবারো পূর্ণ চাহনি নিয়ে দাঁড়ায়। এবারে সে মৃদুস্বরে কিছু কথা বলে। “এতো কিছু নিয়া ভাবিসনা। ব্যাটিং যা করতেছিস চালাইয়া যা। আমার তো টাইমিং ভালো হইতেছেনা। আমি তোরেই স্ট্রাইক দিয়া যাবো আরো চারটা। তারপরে যা হওয়ার হইবো। আমি নিজেও পিটানো শুরু করুম”।

বিপক্ষ দলের সবচাইতে বিপদজনক ফাস্টবোলার হলো বিকাশ। সে ম্যাচে নিজের ফাইনাল স্পেলে বল করতে আসলো। বিকাশ ছেলেটা মাঝেমাঝে হঠাৎ করে খুব অকোয়ার্ড বাউন্স উঠিয়ে ব্যাটসম্যানকে হতবিহ্বল করে তার উইকেট নিয়ে নিতে সক্ষম। হুদা ভাই গতোকালকেও প্র্যাকটিস শেষে কথাগুলো বলছিলো। শফিক চোখজোড়াকে তীক্ষ্ণতর করে বিকাশের হাতের দিকটা লক্ষ্য করতে চেষ্টা করে।

হাত থেকে বলটা ছুটে যেতেই বিকাশের মুখ থেকে অসন্তোষমূলক ধ্বনি উচ্চারিত হয়। সে সাথে সাথে বুঝেছে যে একটা র্যা শ ডেলিভারি করে ফেলেছে। বিরেন্দর শেহওয়াগ বরাবরই শফিকের প্রিয় ব্যাটসম্যানদের একজন। বিশেষত শেহওয়াগের বিদ্যুৎগতির স্কোয়ার কাট। সেভাবেই ব্যাট ঘোরালো। কিন্তু প্লেসমেন্টটা ঠিক যুত মতো হলো না। সর্বোচ্চ দুই রান হতে পারে। দৌড়াতে গিয়ে ক্রিজের মাঝপথে হঠাৎ করেই বিপত্তিটা ঘটলো। রাসেলের স্পোর্টস শুটা বেশ পুরনো ছিলো। শফিককে গতোকালই দেখিয়েছিলো একবার। তারই কিছু স্পাইক পড়ে যেতে যেতে আচমকা রাসেল নিজেও ক্রিজের মাঝখানে হুমড়ি খেয়ে পড়লো। এদিকে থার্ডম্যানের ফিল্ডার ততোমধ্যে লম্বা থ্রোর উদ্দেশ্যে বল ছুঁড়ে দিয়েছে। শফিক ক্রিজের অর্ধেকও তখন পৌঁছায়নি। রাসেল আজকে শুরু থেকে যেভাবে খেলছে তাতে এই মুহূর্তে তার আউট দলের জন্য অপূরণীয় ক্ষতি হয়ে দাঁড়াবে এই বিষয়ে উপস্থিত কারোরই সন্দেহ থাকবার কথা নয়। শফিকের নিজেরও নেই। সে রাসেলকে অতিক্রম করে দৌঁড়াতে চাইলো।

গতো পরশুদিনের চিত্র তার চোখে ভেসে উঠলো।

রেফায়ার মুখে আকাশ ভাইয়ের প্রশংসা।

রেফায়ার নিষ্পৃহতা।

তার নিজের চিন্তাক্লিষ্ট মুখ।

রেজা ভাইয়ের সাথে হওয়া তার কথোপকথন।

শফিক রাসেলকে অতিক্রম করলোনা। এদিকে উইকেট কিপার ততোমধ্যে বল নিয়ে স্ট্যাম্প ভেঙ্গে দিয়ে উল্লাসে মত্ত হয়ে উঠলো। তার দলের অন্যান্যরা প্রত্যেকে উইকেট কিপারের সাথে আনন্দে যোগ দিলো।

নিজের চোখের সামনে পায়ের মাটি আচমকা সরে যেতে শুরু করলে চারপাশের প্রতি মানুষের যেই অবিশ্বাস ফুটে উঠে শফিকের প্রতি রাসেলের সেই দৃষ্টি ভাস্বর হয়ে উঠলো।

শফিক একবার রাসেলের দিকে তাকাতে চাইছিলো। অন্তর্গত সমগ্র বেদনা নিয়ে।

তার ধারণা একবার সেই দৃষ্টি পড়তে পারলে রাসেলকে তার খুলে বলার মতো কিছু অবশিষ্ট থাকবে।

কিন্তু শফিক রাসেলের দিকে তাকাতে পারলোনা। অনেক চেষ্টা করেও।

রেজা ভাই তাকে আগেই জানিয়ে রেখেছিলো। এই ম্যাচে সত্তর কি আশি রান করতে পারলে এ দলে সুযোগ না হোক মধ্যমসারীর একটা চাকরী তার হয়ে যাবে নিশ্চিত। রেজা ভাই যাদের সাথে কথা বলে রেখেছে তাদের কেউ মাঠে উপস্থিত। শফিককে যা দেখবার নিজের চোখেই সব দেখছে।

আজকের পরে রেফায়ার মুখে আকাশ ভাইয়ের প্রশংসা হয়তো আর শুনতে হবেনা।

শফিক রাসেলের মুখোমুখি হতে না চেয়ে তার বিপরীত দিকে মুখ করে দাঁড়িয়ে থেকে শ্বাস নেয়।

DSC_1802


 

DSC_0568

[আল-বিরুনী প্রমিথ – গল্পকার। প্রকাশিত গল্পগ্রন্থ : ‘এসকেপিস্ট ‘, ‘এপিটাফ’। ]

মন্তব্য করুন

Fill in your details below or click an icon to log in:

WordPress.com Logo

You are commenting using your WordPress.com account. Log Out /  পরিবর্তন )

Facebook photo

You are commenting using your Facebook account. Log Out /  পরিবর্তন )

Connecting to %s