১ বা ১২.
অনেকেই আজকাল ঘুমাতে পারে।
আমি দেখছি একটা ডাইনো আমাকে গিলে নিচ্ছে
যাদের বন্ধু ভাবি দেখা হলেই জিজ্ঞেস করছে – কোতায় আচো?
‘পৃথিবীতে’ বললে হাসে, ভাবে সিজোফ্রেনিক হয়ে যাচ্ছি।
তুলোর মতন থাকা জিনিসেরা আরো তুলো তুলো
ডাক্তার বন্ধু আপেল আঙুল খেতে বলেছে
একা আপেল খেলে নি:সঙ্গতা শব্দ করে হাসে।
সেদিন একজন বলেই দিলো – টাকা নাই, চুপ থাক।
বন্ধুটি বলছিলো, প্রেমিকার বাচ্চা হবে
বললাম, আসুন ‘বাবা কেন মামা’ বানাই
আর চাষীকে ডেডিকেট করি, বলেছিলাম।
তারপর আমরা হোটেলে বসে চা খাই
বন্ধুটি বলছিলো, বুঝলেন মনে পড়লেই কাঁদি।
২ বা ১৩.
ব্যাপারটা সিম্পল
রাজেশ খান্না ডিম্পল
আপনি চাকরি করেন, তাই বহু কিছু মেন্টেন করতে হয়, এমনকি শার্টের ইস্ত্রির ভাঁজ, কলারের ময়লা
কবিতা নিয়ে কিছু উচ্চাশা আছে তাই কবিরাজদের দাওয়াইখানায় হাজিরা দেন, তাদের বাণী গেলেন তৃষ্ণার্ত চাতকের মতো, যেন কথা নবজাতকের, নিউলি ম্যারেড কাপলের ওম যারা কিনা পরষ্পরকে চেনার সময় পায়নি
আমি জানি মাঝে মাঝে আপনি হাপিস করেন কমল চক্রবর্তীসহ কারো কারো, ব্যাপারটা ইজি, কমল বহুপঠিত নন, তাই ভাবেন বুঝবে না কেউ, আপনি অন্তত ততদূর গেলেন এতকিছু সামলে তাই থ্যাংক্স দিই।
পারলে একটা উচ্চাশাবিনা কবিতা লিখে দেখান
৩ বা ১৪.
সিরিয়াতে ৪ লাখ মানুষ ঘাস খেয়ে আছে
নিউজটা পড়ে হাঁসের মাংস দিয়ে ভর পেট খেয়ে নেসক্যাফে হাতে নিয়ে বারান্দায় বসলাম, একখানা গোল্ড লিফ নিয়ে
সামনে যে পাহাড় আছে কয়দিন পরেই দেখা যাবেনা, ফ্ল্যাট উঠে যাচ্ছে, দেখেছি একদিন এইখানে জমা জলে মাছেদের ঘরসংসার।
এখন, মিথ্যে না বলতে কি, স্টিভ জবস নিয়ে সিনেমাটা দেখতে বসলেই আমার মাথা থেকে চাবাগানের আন্দোলন, উত্তরবঙ্গে চোরাগোপ্তা মঙ্গা এবং সিরিয়া একাকার হয়ে যাবে।
কেউ লিখে দিতে বললে খেটেখুটে লিখে দেবো, ব্যাপারটার সাথে আমার সম্পর্ক এইটুকুই।
৪ বা ১৫.
খুব প্রেম কত্তে ইচ্ছে করে মাইরি।
ভেতরটা বলে, চেহারা দেকেচিস আয়নায়?
তা, সেসব নেই যকন কিচু, জান্টুস কি কচ্চো! ওয়ার সেমিট্রি আসবা? এসব ভেজাল যখন নাই, জম্পেশ করে, সেলফোন সাইলেন্ট করে, সেই লেভেলের জম্পেশ একটা ঘুম দেয়া যাক।
ঘুমের ভেতর অবশ্যি অজস্র প্রেম হয়।
অগণিত।
কোনো কোনো স্বপ্নে শ্যামলা শিশুকন্যাকে মার্বেল কিনে দিই, সবুজ।
৫ বা ১৬.
ভেবো না যে তুমিই একা একা পাখির ডাক শুনতে শুনতে মারা যাচ্ছো, এমন আরো অনেকেই মারা গেছে ইতিহাসে। পরিবার পরিজন এসে দেখেছে সে সহাস্য এবং মৃত। পাখিরা তখনো ডেকে যাচ্ছে বিধায় তাদের কান্নার ধ্বনি অবশ্য নতুন একটা মাত্রা যোগ করে। এর বেশি নয়।
তুমি মরলে দেখবে, তোমার প্রেমিক ঠিকই অন্যের সমুদ্রে ডুবে ডুবে গুপ্তধন খুঁজে বেড়াচ্ছে। তোমার প্রেমিকা অন্যের জন্যে মেলে দিচ্ছে পা।
বলি কি, না মরে এসো দেখি ফের বেঁচে ওঠা যায় কিনা!
৬ বা ১৭.
অনেকদিন আগে মাধবকুন্ড জলপ্রপাতে ওঠার রাস্তার অনেকটা ওপরে একটি বাচ্চাকে কিছু আমলকী নিয়ে বসে থাকতে দেখেছিলাম। আজ, এখন, কেন জানি না,তার কাতর চোখ দুটি মনে পড়তে চোখ ঝাপসা হয়ে এলো।
সেদিন মনে আছে, সেলিম আল দীন মারা গিয়েছিলেন আর আমার চশমার পাওয়ার বেড়েছিলো। আমি একটাও আমলকী কিনিনি।
ছেলেটার চোখ সমগ্র বাংলা ভাষা।
৭ বা ১৮.
কেউ যখন ট্যাগ দেয় ভালো লাগে
সংযোগের ইচ্ছেই তো জীবন
এক থেকে বহু হতে চেয়েই ভগা
বানিয়েছিলেন অগামগাজগা
আমাকে হাড় হারামি;
যারা rum খায় তারা অতি ধীরে
হতে থাকে হারামি
her আর আমি মিলে প্রেম
(him him মিলেও হয়,এই হিম হিম শীতে,
হাত ধরতে পেরে যাওয়াই তো আরাধ্য,
প্রবেশপ্রস্থান ততো মানে রাখে না)
হাড় জ্বালিয়েও হয় আরেক প্রকার
হারামি যারা কিনা ইতিহাসের ইতরদের
সাথে বোঝপড়া করে, বয়স ভাবেনা তারা
অগ্রজ অনুজ, এইরকম হাড়ামি বড়ো ভালোবাসি
আমি,আমার আয়না-
নানা বায়না
আমি মিটিয়ে যাই মননের
জ্ঞাপনের, গোপনের:
ট্যাগ যারা দেয় তাদের আহার বিহার জাপ্টে ধরে
চুম্বনসন্নিকটে অবস্থানদৃশ্য বড়ো ভালো লাগে:
মাঝে মাঝে জিনগত বাদুড়ের ঝাপটানি মেরুদন্ড বেয়ে বয়ে যায়, তলপেট শিরশির করে আর রাত গভীর হলে অস্তিত্বের চরাচর জুড়ে নামে মঘা নক্ষত্রের জল – আমাকে ‘কবি’ বলে ডেকো না, শব্দই ব্রহ্ম, এই শব্দের ভার বইবার শক্তি নেই আমার
যীশুও কবি ছিলেন, ক্রুশকাঠ তাঁর কবিতা
৮ বা ১৯.
আরেকটা একলা দিন।
একা শব্দটি কচ্ছপের মাথার মতো মৃদু, সলজ্জ মাঝে মাঝে প্রকাশিত হয়ে দেখে নেয় শিশিরের ফোঁটা, তৃষ্ণার জল, তারপর অদৃশ্য হয়ে যায় –
৯ বা ২০.
ঈশ্বর এতো ব্যস্ত কোনোদিন করোনা যাতে আমাকে বন্ধুদের সাথে হুমহুম করে সাইলেন্ট মুভি করে যেতে হয় ইনবক্সে
প্লিজ ঈশ্বর,আমি তোমার ঠ্যাং ধরছি
আমার স্মৃতির গন্ধ তোমার নাকে গেলেই ক্ষেপে উঠছো কেন?
পেছনের গোয়ালঘরের মাটি দিয়ে তুমি কি আমাকে বানাওনি আর ছুঁড়ে দাওনি মর্ত্যপৃথিবীতে?
এখন সেইসব মনে পড়ে গেছে আমার আর তুমি কেন অস্বীকার করে আমাকে আরো বাচাল করে দিচ্ছো আর উত্তরে আমি খালি হুহু শুনে যাচ্ছি!
১০ বা ২১.
এই মুহূর্তে উড়ে যাচ্ছে গ্রাজুয়েশনের বন্ধু
দেশ ছেড়ে চলে যাচ্ছে স্বামীপুত্র নিয়ে
বলেছি যেদিন খুব বরফ পড়বে ফোন করিস
ছেলের মুখে বোল ফুটলে ফোন করিস
কচি আমপাতাগুলির জন্য মন কেমন করবেনা!
মনে পড়ে যাচ্ছে দশ বছর আগের একদিন
ভোরে স্নান সেরে তুই পড়তে এলি, আমিও
দৃষ্টিপথে ভাসার দৃশ্যটুকু চোখে রেখে দিয়েছি
বন্ধু, উড়ে যা চলে যা যেদিন খুব বরফ পড়বে ফোন করিস
শিশুর মুখে বোল ফুটলে ফোন করিস
১১ বা ২২.
দুনিয়ার সবচেয়ে সোজা কাজ কি বলুন তো!
কবিতা লেখা
অনুভূতিটা লিখে ফেলবেন খালি।
প্রচন্ড কান্না পাচ্ছে
খুব জড়িয়ে ধরতে ইচ্ছে করছে কাউকে
যারা পাত্তা দেয়না তাদের গালি দিতে ইচ্ছে করছে
হঠাৎ স্বপ্নে স্কুলবেলা এসে গেলো
মনে পড়ে গেলো একাঘরে তাকে পেয়েও ছুঁতে পারেননি
কিংবা মনে পড়লো বাবার বাইসেপে ঝোলা
মায়ের কান্না মনে যদি পড়ে ফেল করায়
প্রেমিকার ভাই গালি দিয়েছিলো মনে পড়ে গেলে
শহরের কয়জন অগ্রজকে মনে মনে শুওরের বাচ্চা বলেন আর সামনে গেলে বলতে পারেন না কিছুই
বয়সে বড়ো মেয়েটিকে বা নাদুস ছেলেটিকে ভালবাসি বলতে ইচ্ছে করে
লিখে ফেলুন এসব
লিখতে থাকুন
দরকার নেই ছাপার
কাউকে তেল দেয়ার
বই করার
লিখে যান
জাস্ট ভাবুন চলে যাওয়াটিকে যতোটা ভালোবাসেন কবিতাকে পারেন?
প্রতিবার আত্মরতির পর যে অসহায়তা গ্রাস করে আপনাকে পারেন সাদা কাগজে ফোটাতে?
লিখে ফেলুন
লেখো, বন্ধু

[সৈকত দে – চট্টগ্রামের পোলা, জন্ম ১৯৮১। পাঠক, ফিল্মখোর, মিউজিক পাগল। প্রিয় লেখাপত্র অনুবাদ করেন। তিনি মাসুদ রানা আর ভাস্কর চক্রবর্তীর ফ্যান, বর্তমানে ফিল্মনির্মাতা থিও এঞ্জেলোপুলুসকে খুব ভালোবাসেন। – নয় নাম্বার বাসের হেল্পারগণ]