***
হেঁটে যাওয়া কুরিয়র সম্মত। তুমি চলে গেছ। পায়ের পাতা ও পাতা মাড়িয়ে এক থেকে
আর এক ধুলো মাটিতে। যেন তোমার ভেতর প্যাকেট আছে আর
তোমাকে কুরিয়র করেছে কেউ
ভোরের দিকে পার্থনার দিকে বিউগলের দিকে যেখানে হাঁসেদের সমবেত ধ্বনি
উঁচু হয়ে জমে আছে , সাঁচি স্তম্ভের দিকে।
হাঁস বৌদ্ধ ধর্মের এক প্রাণী করুণ ও স্নেহাদ্র হে প্রপিতামহী
তুমি কম্নডুলের ন্যায় তাম্রতুল্য , সল্পবাক , ঋষিকল্প , এই সুষমায়
চৈ চৈ মন্দ্রে খাঁচার দরজা খুলে দেবে
সন্ধ্যা নামবে , বাদল নামবে দাওয়ায় নামবে লাল চা ও পিঁপড়ে ,
পিঁপড়ের মুখে সারি চলে যাওয়া গুঁড়ো
বিস্কুট বলা হবে তাকে।
শুয়ে পড়া নিরক্ষ রেখার মত। যেন কোন উষ্ণমণ্ডল থেকে তোমার চাদরে একটি
সুতো এসে গেছে। তার ওপর পঙ্খের বাতাস।
আর্দ্র, ঠাণ্ডা। দুধের ঘন সর থেকে বিছানায় রাখা হয়েছে । এইরকম।
ঘুমন্ত তাই তোমাকে গহ্বরের সাথে তুলনা করি, খানিক মাটি খুড়ে তোমাকে প্রতিস্থাপন
করি, যেন ব্যথা না লাগে, মর্মর না লাগে! যেন সিয়াটিক ছড়িয়ে যায়, ঘাস ও
বীজের হেলানে তোমায় বসাই। হে নিতম্ব বসে থাকা অবতল প্রচেষ্টা কোনো, ঘাস মাটি বীজ, তোমায়
অবতলে বসিয়ে রাখি।
এখানে বৃষ্টি হয় না তবু কোনো সময়
আমি প্রবল ভাবি বৃষ্টি হয়েছে
জুতোয় লেগে গ্যাছে জল আর
জুতোর ভেতর যে আত্মা, পাণ্ডুর ও প্রগতিশীল, ঝুঁকে গিয়ে ফিতে বেঁধে নিতে
আমি মূর্ধন্য এর কথা ভেবেছি, তার নিচু হয়ে থাকা মুখ ও
ঢলঢলে গলার কথা,
সে চলে যাছে পেট্রলপাম্পের পাশ দিয়ে মৃদু ও চিন্তিত সে চলে যাচ্ছে
সজনে গাছের পাশ দিয়ে হালকা ও বিবর্ণ হয়ত মাঘের শেষ বেলা পড়ে এসেছে হওয়ায় এসে
শুকনো আখরোটের ক্ষেত, দুলে গ্যাছে কৃষিকাজ, ভ্যারিওলা ভেরা
মাঘী পূর্ণিমায় তারা ফুটবে
আমার বিস্তীর্ণ ত্বকে ফুট দিয়ে খুলে যাবে ভোরের ফুলকপির মত আর
আমায় ডেকে নেবে কোনো আইপিভি ৪
১০.১২১.১.১ এইভাবে কিছু ভাঙা বাসমতী পেয়ে যাব আমি
শান্ত হয়ে বসে আছি, যেন মাথার ভেতর
ছাতিম উড়িয়ে দিয়েছ তুমি, একটি ঘর একটি কপাট বন্ধ করে।
বাইরে হাওয়া দিচ্ছে
সকালের এস এম এস দিচ্ছে মানুষ স্বচ্ছন্দ ও চিরল
নারিকেল বিনুনির পাতা দুলছে । ছাইদানি ও নার্ভ টেবিলে রেখে
কেরলে বসে আছি আমি কলিংবেল বেজে উঠবে এমন। ভদ্রভট্টকম
শব্দে
শার্ট পরে নেব জুতোর ফিতে বেঁধে নেব শাদা ও পরিচ্ছন্ন ডিও
স্প্রে করে নেব কলারে, অফিস বেরিয়ে পড়ব আমি।
যে কোনো চোট লাগা, যেন ভেন্ডারে বসে আছি, মাংস
উড়ে গেলে রামরাজাতলা চলে আসবে, লালার মধ্যে
নল্পুর, ৩ ইনটু .৫ ডায়ামিটার, আংশিক
লোকাল চিবিয়ে নেবে তুমি
ধাতুরূপ এমন কোনো স্বাদ, জিভের পরত জড়িয়ে কোনো হলুদ ভেপারের আলো,
অথচ থু, থু করলে স্প্লিনটার ও ইস্পাত ছিটকচ্ছে, মন
কার কথা ভাব! একা!
নেবে পড় কার আঙুল ধরে দুপুরের ঘাম ঘোরানো স্টেশন, লেবু চা
আলোকিত সুতির রুমাল
উলু, উলুবেড়িয়া বিবাহ দেবে তোমায়!!!
কোথাও বৃষ্টি হচ্ছে, অনেক পাতা ভিজে যাচ্ছে, পাতি
যেন তাজ
সামান্য শ্রাবণে ঢাকা দেওয়া ছিল আজ তোমার ছাঁচতলায় এসেছে
আমি টের পাই, আমি দেখি ধারার নিচে তুমি বালতি রেখেছ,
যেন এই সাশ্রয় তোমার মুখধোয়া নিয়ে
লিকার হবে
তোমার শ্যাম্পু না করা চুল, আটপৌরে শাড়ি ও বালতি রাখা
স্বাদ হবে
বলবো বাহ তাজ !
অনেক বৃষ্টির নিচে যেন মুকুট পরে ছিলাম, খুলে রাখছি
জল থেকে জলের ব্যবহার আলাদা করে দেওয়া, আনন্দ দেখছি আমি।
বৃষ্টি হলে কিছু বিস্ময়চিহ্ন পড়ে যায়, এইভাবে লেখা যেত যেন, এই ভাবনা
তুমি বাদ দাও, বরং ভেজো
পাতার নিচে, বাসস্টপের নিচে, ব্রিজের ওপর ভেজো আর
এই গিলাপন নিয়ে দেখ
অটোর আলোর সামনে দ্রুত ফুলকি জন্মদিনের মত লাগে!
রাস্তার ফুটোয় জমে ওঠে জল, বরং ভাবো
এই জমা জলে পোকা হতে পারে, তাদের স্বভাবিক ডেলিভারি ও স্বাস্থ্য নিয়ে
স্টেথস্কপ নিয়ে
যেখানে এক হৃদয় থেকে আর এক কানের ভেতর ইয়ুর্টান থাকে
ওলা বুক করে নিতে হয়-৩৭৭৪
ওটিপি বলে দিতে হয় আমায়…
ওয়ান্স আপন আ টাইম, আমি ঘাড় ঘুরিয়ে দেখে নিচ্ছি সোয়া চাপ
, স্মওকড মোমো, পান মশলার পাউচ
টিপলে পুঁতি ও হাওয়া বেরুবে, দেখে নিচ্ছি কিলোকারি ব্রিজ মউসাম্বি
রসের সামনে চুমুক ও স্বাস্থ্যে মানুষের ঠোঁট ভরে আছে, সংসার ভরে আছে আর
সারাদিনের ভিখিরি হাত গুটিয়ে শুয়েছে এখন সুশীতলে, মর্মরে,
মর্মরে কোনো আওয়াজ নেই, অনুশীলন নেই অথচ ওয়ান্স
এই মথুরা রোডে যেন পোড়েন চাপানো হয়েছে, এই কিলোকারি ব্রিজের ওপর
আমার ওজন!
দেখে নিচ্ছি, যে মেয়েটি বাচ্চা এক্সেলারেটর লাফিয়ে উঠে আসছে, তার ছোট্ট ওজন, বেলুন বিক্রি হচ্ছে
ঘাড় ঘুরিয়ে দেখে নিচ্ছি।
লিগামেন্ট কে ধন্যবাদ জানাচ্ছি আমি।
অবকাশ বললে আমি ডালপালা বুঝি, কেচে দিয়ে গাছের গায়ে
মেলা আছে
আর পাতা টাঙান
আর হাসপাতাল, উন্নত গ্রীবা কোনো এক হাঁসের প্রজাতি
যেন
শাদা ও প্রবাহহীন – ১৩ নং বেড
ও টেবিল
ও লংক্লথ, একটি বেদানা
হাসপাতালের পাশে সেই নিমের গাছ, নিমফল পেকেছে সেই এ্যম্পুল
থেকে সিরিঞ্জ ভরে নিচ্ছ আমার লসিকার ভেতর
আমার লসিকার বাইরে
সামান্য ফুটফুটে তেঁতো বয়নশিল্প হয়ে আছো তুমি, নার্স
হাঁস পুষব বলে ঘুমিয়ে পড়েছিলাম
গায়ে হাত বুলিয়ে দেওয়ার শাদা
সহজ হাঁস, অথচ
তুমি বললে – ঘুম কোনো এক ধাতুরূপ
দুলে দুলে মুখস্ত করতে হয়! সামনে মাদুর থাকে, বোনা থাকে
হ্যারিকেন আর
আমি এই চিত হয়ে শুয়ে এখন ছাদের দিকে তাকিয়ে আছি
আর বলছি
শোনো,
বোতলের ছিপি তুমি আটকে রেখো
অল্প বিয়র রেখো, শ্যাম্পু রেখো, ওষুধ হাওয়া ও তরলা আলতা রেখো!
তাতে মাধ্যাকর্ষণ থাকে
ছিপি খুলে রাখলে, খালি, সে ছাদের দিকে তাকিয়ে থাকবে।
__
ড্রইং – মহসিন রাহুল
[অস্তনির্জন দত্ত (জন্মঃ অক্টোবর,১৯৮২) -পেশায় এঞ্জিনিয়র। উচ্চাকাঙ্ক্ষাঃ হাঁস পোষা। নেশাঃ তুষার দত্ত, বেগম আখতার, নিলুফার ইয়াসমিন,অঞ্জলি মুখোপাধ্যায় ও পূরবী দত্ত। প্রকাশিত বইঃ ‘একটা দুটো অস্ত’, ‘জাহাঙ্গীরকে লেখা কবিতা ‘]