ভূমিকা

পানু সিংহর ইচ্ছা, লেখক হইবেন। বাঙালি, লেখক না হইতে পারিলে নমো নমো করিয়া পাতের সংস্থান যদি বা হয় জাত রক্ষা হয় না— যথা আঁটকুড়া কুলীন। পানু সিংহ বিস্তর পরিশ্রম করিলেন। দিস্তা দিস্তা রচনাবলী, অমনিবাস চিবাইলেন। প্রথমে কাব্য টানিয়াছিল, কারণ রস— রসে পাঁউরুটি ভিজিল না। পানু ঘটা করিয়া কিছুদিন রবীন্দ্রসঙ্গীত লিখিলেন (ভেঙ্গেছ দুয়ার এসেছ জ্যোতিরম্যায়, আট হাজার বাষট্টি টাকার দরজা, খর্চা কে দ্যায় !)— হাউ হাউ করিয়া লোকে মারিতে আসিল। সমস্ত অবজ্ঞা করিয়া পানু লিখিয়া চলিলেন। যদ্যপি পানুর কলমের তোড়ে কাব্যলক্ষী কোঁ কোঁ, সম্পাদকের দপ্তরে চিঁড়া ভিজিল না। অতঃপর পানুর দুঃখে ব্যাবেজ সায়েব কম্পিউটার আবিষ্কার করিলেন। বাজারে ব্লগ আসিল। পানু ব্লগার হইলেন। এই হইল পানু সিংহের ব্লগদাবলী। আজ্ঞা হউক।
ভূমিকাকিমা
কবি পানু সিংহর সাথে কথা হচ্ছিল, এয়ার–ট্র্যাভেলে ড্রেস কোড ইত্যাদি নিয়ে। পানুবাবু বললেন— ‘আমি তো আন্ডারওয়্যার পরেই যাতায়াত করি। জকির ব্রীফ আর স্যান্ডো গেঞ্জি, কখনো সমস্যা হয়নি‘।
পরের সপ্তাহে ফ্লাইট, এক্সপেরিমেন্টোপলক্ষে আমিও, ড্রয়ার আর হাতকাটা স্যান্ডো। ট্যাক্সি থেকে নামতেই গ্রেপ্তার। পানুবাবুকে ফোন— ‘দাদা, বাঁচান, এরা সব করে কী!’ পানুবাবুর কথা মত গুছিয়ে ঘটনা জানাতে; নির্বিকার, জিগ্যেস করলেন— ‘জামা প্যান্টের রঙ কী?’ আমি তো পপাত চ! বলি— ‘এই যে সেদিন বললেন আন্ডারওয়্যারে…”। বললেন— ‘হ্যাঁ সে তো বটেই, তবে ওপরে জিনের প্যান্ট আর কুর্তাটা চাপিয়ে নিই কি–না!’ বোঝো!
পানু সিংহের গদাবলী
১।
পানু সিংহ খেপে খৈতান! –“এই হল কি–না কবিতা? ‘কতবার ভেবেছিনু আপনা ভুলিয়া/তোমার চরণে দিব হৃদয় খুলিয়া’— বলি, রহস্য কই রহস্য? বীচ–রাস্তায়, চরণে হৃদয় খুলিয়া! আজটেক লেভেলের ভায়োলেন্স! পাঁটার রক্ত দিয়ে চিঠি লেকা! ফিনেস কই ফিনেস! ‘আপনা ভুলিয়া’ টাল হয়, ঘোর হয়, ফিনেস হয় না! ”
মিনমিন করে বল্লুম-“ইয়ে, মানে, জীবনানন্দ যে বলেছিলেন—‘বরং নিজেই তুমি লেখো নাকো একটি কবিতা’”
পানু বাবু বললেন—“লিকেচি তো!—
‘কতবার ভেবেছিনু আপনা ভুলিয়া
চৌমাথার মোড়ে দিব পেন্টুল খুলিয়া’
—দ্যাকো, এইখানে ‘আপনা ভুলিয়া’ কি’ভাবে ঘোর থেকে চুক্কি হয়ে গ্যালো। বলি, ফিনেস দেকেচো! চৌমাথার মোড়ে পেন্টুল খুলে দেওয়া। আর কার পেন্টুল খুলবো, সে নিয়ে কী বিপুল রহস্য! হহুঁ কবিতা শেকাতে এয়েচে!”
২।
খোকা করে গবেষণা ছন্দ‘কে ভাঙ্গিয়া
শিথানে লুঙ্গি দোলে, কড়িকাঠে জাঙ্গিয়া
—
ছন্দের ক্লাস বাই পানু সিংহ
—
দুর্গতিশীলরা বলে আধুনিক ছন্দ তিন প্রকার, যথা— স্বরবৃত্ত, মাত্রাবৃত্ত, অক্ষরবৃত্ত— ইহাদের উদ্দেশ্য একটিই— খাপে খাপ পঞ্চার বাপ! গতিশীল পানু সিংহ বলেন— ফ্লেক্সিবিলিটি— চাপে চাপ, পঞ্চার মাসতুতোবাপ..। পঞ্চা অ্যান্ড বাপ কমন। বাকীটা নমনীয়তা। মেসোমশাই, অ্যাডজাস্ট! তো আজকে আমরা শিখব ‘কোই–আহা–বৃত্ত‘ ছন্দ। হন্ডুরাস হইতে আমদানি।
—
উদাঃ
ছন্দের ক্লাস বাই পানু সিংহ
—
দুর্গতিশীলরা বলে আধুনিক ছন্দ তিন প্রকার, যথা— স্বরবৃত্ত, মাত্রাবৃত্ত, অক্ষরবৃত্ত— ইহাদের উদ্দেশ্য একটিই— খাপে খাপ পঞ্চার বাপ! গতিশীল পানু সিংহ বলেন— ফ্লেক্সিবিলিটি— চাপে চাপ, পঞ্চার মাসতুতোবাপ..। পঞ্চা অ্যান্ড বাপ কমন। বাকীটা নমনীয়তা। মেসোমশাই, অ্যাডজাস্ট! তো আজকে আমরা শিখব ‘কোই-আহা-বৃত্ত’ ছন্দ। হন্ডুরাস হইতে আমদানি।
—
উদাঃ
রবিকরে জ্বালাতন
আউয়া আউয়া
বরষা ভরসা দিল
আউয়া আউয়া
মীনগণ হীন হয়ে
আউয়া আউয়া
এখন তাহারা সুখে
আউয়া আউয়া
অথবা
নীড় ছোট ক্ষতি নেই
আউয়া আউয়া
এ–কী আনন্দ
আউয়া আউয়া
৩।
একটু কুছোঁয়া লাগে, একটু কুকথা শুনি — আজি হতে শতবর্ষ পরে–র রিপিট টেলিকাস্টে কবি পানু সিংহ
৪।
অতঃপর চিত্তপ্রিয় কবি কাঁকুরগাছির এলান পোঁ–র রোমহর্ষক সাক্ষাৎকার পড়িতে পড়িতে পানু সিংহের সাহারায় শিহরন জাগিল। বগল ছম ছম করিয়া উঠিল। পানু সিংহ হতবাক দেখিতে লাগিলেন তাঁহার অন্তঃস্থলে নানা বিচিত্র আবেগসকলের স্বয়ংক্রিয় প্রস্ফুটন। এই ধাঁইধাঁই করিয়া চক্ষে জল আসিল, তো করতল অশ্রুনিবারণহেতু চক্ষের নিকটে আনিবা মাত্র, সে অশ্রু ভীমবেগে ব্লাডারের দরজায় ঘা দিয়া ঝাঁপতালে গাহিয়া উঠিল —“খোল খোল দ্বার”।
আহা কবি যে স্থানে বর্ণনা করিতেছেন—উদভ্রান্ত সেই আদিম যুগে স্রষ্টা যখন পুলিশ কমিশনারের বাসায় আসন পিড়ি হইয়া আলুর ছেচকি সহযোগে পাম তেলে ভাজা নুচি খাহিতেছেন!– অহো! হৃদয় হইতে কেঁউকেঁউ করিয়া উদ্গার উঠিয়া আসে! সে কী দৃশ্য, সে কী বর্ণন! অহো আজ পানু সিংহ ধন্য, তাহার চার চোদ্দং ১৩২ জেনারেশান ধন্য!
৫।
আধুনিক! হিক! (হেব্বি সামলে নিয়েছি! আধুনিক কেন, আজকাল রাঁধুনি বলতেও আতংক, কে কোথায় পেঁদিয়ে আড়াইপাতা করে দ্যায়!)।
কবি পানু সিংহ–র সাথে কথা হচ্ছিল। অধুনা বাংলা ভাষায়, ইংরেজি, হিন্দি–র ইনগ্রেশান কী’ভাবে ভাষাটাকে গাড্ডায় নিয়ে যাচ্ছে, এই নিয়ে রিএকশান, মানে প্রতিক্রিয়া, চাইছিলাম আর কী!
পানু বাবু, চোখ গোলগোল করে বললেন—“ক্যানো! বাঙালি কি আজকাল ‘বাবা কেন চাকর’ কে ‘পাপা কিঁউ সারভেন্ট’ বলচে?”
৬।
‘নিবিড় মামা তিমির হতে বাহির হল‘
—মবি ডিক মহাকাব্যঃ বাই পানু সিংহ মেলভিল
(বহুমাত্রিকতা লক্ষণীয়)
৭।
It is with great pleasure I declare, ইয়ে, মানে, কাকু, your fly is open… এই হল পানু সিংহ–র গদ্যশৈলী, আকাশতোড় শুরুয়াত, মাঝে আমতা আমতা এপলোজেটিক, অন্তে ফ্রিভোলাস। কী আর করা।
৮।
ক) যখন পড়বে না মোর পায়ের চিহ্ন এই butt-এ— লাতখোরদিগের প্রতি পানু সিংহ
খ) “রবীন্দ্রনাথ আবহাওয়া দপ্তরের জন্য সাবধানবাণীও লিখতেন। ১৯২৯–এর বিখ্যাত সাইক্লোন ‘জগঝিংকু‘-র সময় উপকূলবাসী মৎস্যজীবীদের জন্য তাঁর গান— ‘এসোনি পবনে‘ বা কবিতা ”ওগো, আজ তোরা যাসনে ঘরের বাহিরে‘ আজও প্রাসঙ্গিক”– রবীন্দ্র গবেষক পানু সিংহ
গ) যার যেমন সাধ্য তেমনই তো পৃথিবীদর্শন হপে বাপা!—‘গাঁড়ের ভিতর দিয়ে যখন দেখি ভুবনখানি’—এই হল গে প্রক্টোলজিস্টের গান।–জীবনদর্শন সম্পর্কে পানু সিংহ
৯।
‘দ্যাকো বাপা, বেশি পচ্চিম পচ্চিম কোরো না—ওদের Avant-garde তো আমাদেরও আভাগাঁড়—জোনাকি, রেকারিং আলোআঁধারি—ইন্সটলমেন্টে উদ্ভাসিত পশ্চাদ্দেশ—মেনস্ট্রীম জ্বলে জ্বলে নেভে, প্যারালাল নিভে নিভে জ্বলে‘ — পানু সিংহ
১০।
‘এটা কি 244-1139! ডি কে লোধ তুমি পাচ্ছ কি শুনতে?’… গানঃ ডিকে লোধ; লিরিকঃ পানু সিংহ
১১।
Morality defines the code of fools. Logic defines the code of smart ones. Without empathy, either is a giant pain-in-the-arse.
তর্জমায়ঃ
মূর্খের আছে নীতিবোধ, বুদ্ধিমানের যুক্তি। সহমর্মিতা ব্যতিরেকে উভয়ই বৃহৎ পোঁদের (বা পোঁদের বৃহৎ) বেদনা মাত্র।
—–
কবি পানু সিংহ–র দিকচক্রবাল–ছাপ করোলারিঃ মন্দির, মসজিদ, গুরুদ্বারের বাহিরে মনুষ্য সহমর্মিতা অর্জন করিতে পারে। সে সকল স্থলে একের পর এক ছাড়িয়া রাখা জুতায় পা ঢুকাইয়া, সহমর্মিতা অর্জন করা যায়। খ্রীস্টধর্মে সহমর্মিতার সংকুলান নাই, কারণ গীর্জায় সকলে নিজনিজ জুতা পরিধান করিয়াই প্রবেশ করেন।
১২।
নৃতনাট্যঃ খ্যামা
প্রহরী—‘কি আছে তোমার পেটিকায়’
শ্রেষ্ঠীকবি—‘আছে মোর ফর্ম, আছে মোর ফর্ম’—‘এই পেটিকা আমার বুকের পাঁজর যে রে’—ইনাইয়া বিনাইয়া কান্না।
ভাস্কর চক্রবর্তী—‘আমাদের দম নেই স্ট্রাকচার আছে’, ‘কনটেন্ট কবে আসবে সুপর্ণা?’
সন্দীপন আলোচক—‘এ দেশে লিখেছে কে? মার্কেজের ঐ যে একটি কমা, কী ব্যবহার! আর ওই যে এলিয়টের প্রকান্ড রহস্যময় সেমিকোলন— আহ! সে–কী অবধারিত! অবশ্যম্ভাবী!! অনিবার্য্য (কার ভার্যা?)!!! ইয়ে মানে, অনাদ্যন্ত জৈববিশ্বে সে এক বিপুল আবিষ্কার!!!!’
পানু সিংহ—”ড্যাকরারা বলে কি! আরে দোর্মশাই, আমি তো জানতুম কমা’র ঢেকুর মাতায় উঠলে সেমিকোলন হয়, আর এই তো সেদিন পঞ্চাশের কে যেন খালাসীটোলায় বলছিলো— ‘দোর শালা সুধীন দত্ত! ইয়োরোপের যদি মালার্মে থাকে আমাদের আছে মাল–আর–মেয়ে‘”
বিনয়ম জুমদার—‘পৃথিবীর সব রদ্দি কবিতারই জ্যোতির্ময় আলোচনা আছে’
১৩।
মলয়, তুমি কি “য়” হারাইয়াছো?
— কবি পানু সিংহ উবাচ (সূত্রঃ পানু সিংহ বিরচিত উপন্যাস “গোপালকুন্ডলা“)
(নোটঃ কবি পানু সিংহ পইপই করিয়া বলিয়াছেন, এই স্থলে “মলয়” = বাতাস/হাওয়া মাত্র যাহা “য়” হারাইলে দৃশ্য ও নাসিকানুভূত হয়। কোনো ব্যক্তি মলয়ের সহিত সাদৃশ্য খুঁজিবেন না)
১৪।
পানু সিংহ বলিলেন— বুড়ো হয়েচি তো, গ্রীষ্মকালে লুঙ্গির আরাম টের পাই। তাক ক‘রে টেবিল ফ্যান চালিয়ে গুনগুন করি— ‘অমল ধবল _লে লেগেছে…”
১৫।
অনুবাদ বনাম হনুবাদ
—————————
বাহাদুর শাহ জাফর / ন কিসি কী আঁখ কা নুর হুঁ (ওরিজিনাল)
ন কিসি কী আঁখ কা নুর হুঁ, ন কিসি কে দিল কা করার হুঁ,
ন কিসি কে কাম আ সকে, ম্যয় ওহ এক মুশথ–এ–গুবার হুঁ ।
ম্যয় নহীঁ হুঁ নগমাঁ–এ জাঁ–ফিজা, কোই সুন কে মুঝ কো করে গা কেয়া ?
ম্যয় বড়ে বিরুগ কী হুঁ সদা, কিসি দিল–জলে কী পুকার হুঁ
মেরা রঙ রূপ বিগড় গ্যয়া, মেরা ইয়ার মুঝ সে বিছড় গ্যয়া,
জো চমন খিজাঁ সে উজড় গ্যয়া, ম্যয় উসি কী ফসল–এ–বাহার হুঁ ।
ন তো ম্যয় কিসী কা হবিব হুঁ, ন তো ম্যয় কিসী কা রকীব হুঁ,
জো বিগড় গ্যয়া ওহ নসীব হুঁ, জো উজড় গ্যয়া ওহ দায়র হুঁ ।
হম পর ফাতেহা কোই আয়ে কিঁউ, কোই চার ফুল ছিড়ায়ে কিঁউ ?
জাফর, আশক কোই বহায়ে কিঁউ, কে ম্যয় বেকসী কা মজার হুঁ ।
————————————————————————–
কবি ঋতুপর্ণ সিংহ–র অনুবাদ
কারো আঁখিপাতে জ্যোতি নই আমি, কোনো হৃদয়ের শান্তিবাসর,
কারো প্রয়োজনে আসি নাই কাজে, শুধু এক মুঠি ধুলির চাদর ।
কোনো অপরূপ গুঞ্জনরেশ, নই আমি নই, কী হবে শুনিয়া ?
আমি শুধু এক ক্রমার্তনাদ, প্রসবিত হই কলিজা পুড়িয়া ।
আননজ্যোতি, প্রিয়মুখ যত, আঙ্গন ছাড়ি হারায়ে গিয়াছে,
আমি ঝরাফুল বসন্ত বনে, যে বনে বাহার বিদায় নিয়াছে ।
কোন হৃদয়ের হৃদয় নই গো, কোন শত্রর দুশমন ঘোর,
আমি বিমূর্ত দগ্ধভাগ্য, স্পন্দনহীন মৃত সরোবর ।
কেউ কেন দিবে দু’টি ঝরাফুল, অশ্রু অর্ঘ্য আমার শিয়রে,
অসহায়তার ইতিহাস হয়ে, জাফর মুছিবে কালপ্রান্তরে ।
———————————————————————
মহাকবি পানু সিংহ–র হনুবাদ
কারোর চোখের রোশনি নই বে
সীনার শান্তি
কারোর কাজে লাগিনি , শালার
ধুলোর মুঠঠি
জান ভ’রে দেয়া মিউজিক নই
শুনবে কে বাপ !
ফাঁকা গাম্বাট আওয়াজ, পোড়া
কলজের ডাক
থোবড়ার গ্লেজ, ইয়ারের ফেস
হাপিস হয়েছে
শুখা ফুল আমি, ফাঁকা বাগানের
ইয়ের নীচে
কোনো হারামীর দুশমন নই,
জিগরি ইয়ার
ফুলস্টীম পোড়া কপাল, শুকনো
নদীয়া’র পার
কোন রঙ্গিলি ফাতেহা পড়বে
আমার কবরে ?
ফুল দেবে শালা জাফরের, ক’টা
হোপলেস হাড়ে ?
১৬।
স্থানঃ ডাক্তার ডিকে লোধ–এর গুপ্তরোগ চেম্বার
উপবিষ্ট, বঙ্গভাষার তাবড় তাবড় সাহিত্যিক—অর্শ দত্ত, ভগন্দর মিশ্র, ফিশ্চুলা রায়চৌধুরী, নচেৎ গুপ্ত, ক্ষুদ্রম রামলিঙ্গস্বামী, বক্রম শ্যামলিঙ্গস্বামী, শীঘ্রপতন ধাড়া, স্বপ্নদোষ চক্রবর্তী…ইত্যাদি ইত্যাদি…
এক নাতি যুবকের প্রবেশ—
—নাম?
—আজ্ঞে, কণ্টক পত্রনবীশ—
—কী করা হয়?
—আজ্ঞে, কাব্যচর্চা
—এখানে কেন?
—আজ্ঞে, হ্যান্ডিলে বিষাদ!
—মানে?
—ইয়ে, খরিশে বিষাদ
—হরিশে বিষাদ বলুন!
—আজ্ঞে না, খরিশে—ডাঁড়ায় না!
—কেন?
—আজ্ঞে রবীন্দ্রনাথ থেকে উর্বশী ও আর্টেমিস অব্দি ঠিকই ছিল, জীবনানন্দে গিয়ে আটকালো।
—কেন?
—আজ্ঞে, বাংলার মুখ দেখার পর থেকে আর কিছুই দেখতে পাই না!
—৭–৮ ইঞ্চি নিচে তাকালেই হয়!
—আজ্ঞে, ‘চিত্ত যেথা ভয়শূন্য উচ্চ যেথা শির’ প্যাকটিশ করতে করতে ঘাড় স্টিফ!
এইটুকু গতরাতে স্বপ্নে দেখিনু…
বাই দ্য ওয়ে, বাংলায় প্রথম লেখা যৌথ কবিতা হল ‘উর্বশী ও আর্টেমিস“– আ কোলাবোরেশান বিটুইন প্রভু দেবা অ্যান্ড বিষ্ণু দে।
টেক ইট ইজি!
ডিস্ক্লেমারঃ স্বপ্ন তো! ন্যাচারালি, সব চরিত্র গাল্পনিক
(চলবে…)
পানুজীবনী
নতুনের কোন চাপ নেই। জন্মের পর মামাবাড়ি থেকে আমার নাম রাখা হয়েছিল “নতুন”। আমার কোন চাপ নেই, তাই নতুনের কোন চাপ নেই। আমার কোন চাপ নেই, কারণ আমাকে নিয়ে কারো চাপ নেই।
স্কুলে, ভূগোলের মাস্টারমশাই বলতেন—“বাংলাটা তোর ভালো আসে, ওটাই পড়িস”। বাংলার শিক্ষক বলতেন—“সায়েন্স, বুঝলি! ওই স্ট্রীমেই তোর ভবিষ্যত”। বিজ্ঞানের স্যার বলতেন—“ইতিহাস আর অর্থনীতির একটা কম্বো নিতে পারিস, এই বিষয়গুলোতে তোর একটা ইনহেরেন্ট ট্যালেন্ট আছে”।
পরবর্তী কালে কবিবন্ধু ও কবিজ্যেষ্ঠ-রা বললেন “রম্যরচনায় তোর হাত ভালো”, গদ্যকাররা বললেন– “তোর লাইন কিন্তু কবিতা”— কেউ তার নিজের লাইনে রেখে আমায় অর্থকর করে তুললেন না। তাই আমিও চাপ নিলাম না। আমি আজো জানিনা, আমি ভূচর, জলচর, নভোচর, না-কী প্লেন অ্যান্ড সিম্পল খচ্চর।
সম্পাদক লেখা চেয়ে চাপ নিলেন না। আর আমি, কনফিউজড লেখক, লেখা দিয়ে সম্পাদকের চাপ বাড়ালাম না। এই বেশ। এই শ্রেষ্ঠ। যাঁরা বলেন চাপে হীরে তৈরী হয়—তাঁদের অভিনন্দন।
[…] প্রথম পর্বের লিঙ্ক […]
LikeLike