ভূমিকা

পানু সিংহর ইচ্ছা, লেখক হইবেন। বাঙালি, লেখক না হইতে পারিলে নমো নমো করিয়া পাতের সংস্থান যদি বা হয় জাত রক্ষা হয় না— যথা আঁটকুড়া কুলীন। পানু সিংহ বিস্তর পরিশ্রম করিলেন। দিস্তা দিস্তা রচনাবলী, অমনিবাস চিবাইলেন। প্রথমে কাব্য টানিয়াছিল, কারণ রস— রসে পাঁউরুটি ভিজিল না। পানু ঘটা করিয়া কিছুদিন রবীন্দ্রসঙ্গীত লিখিলেন (ভেঙ্গেছ দুয়ার এসেছ জ্যোতিরম্যায়, আট হাজার বাষট্টি টাকার দরজা, খর্চা কে দ্যায় !)— হাউ হাউ করিয়া লোকে মারিতে আসিল। সমস্ত অবজ্ঞা করিয়া পানু লিখিয়া চলিলেন। যদ্যপি পানুর কলমের তোড়ে কাব্যলক্ষী কোঁ কোঁ, সম্পাদকের দপ্তরে চিঁড়া ভিজিল না। অতঃপর পানুর দুঃখে ব্যাবেজ সায়েব কম্পিউটার আবিষ্কার করিলেন। বাজারে ব্লগ আসিল। পানু ব্লগার হইলেন। এই হইল পানু সিংহের ব্লগদাবলী। আজ্ঞা হউক।
পানুসিংহের গদাবলী – দ্বিতীয় পর্ব
১৭।
‘ময়না, ময়না, তোমার ভাড়াটিয়া নাই কুসুম!’— ফ্রম ‘কোটাল নাচের প্রীতিকথা’ বাই পানু সিংহ
১৮।
‘কবিতাকে আমি পাড়াতুতো ভগিনীর ন্যায় জ্ঞান করিতাম। এস্থেটিকেস-এর তাড়নায় তাহার তনু হইতে কিছু অলংকার খুলিয়া লই। এই মাত্র। কামনাবিহীন। আজ কবিতারে আমি মেজোমাসির বাড়িওয়ালার খুড়শাশুড়ি জ্ঞানে দেখিয়া থাকি। প্লিজ কবিতা, মী-টু বলিও না।‘—পানু সিংহ
(ইয়ার্কির তোড়ে মানুষ সেন্স ও সেন্সেবিলিটি হারিয়ে ফেলে—এ তারই নিকৃষ্ট উদাহরণ। যাঁরা মী-টু ঘোষণা করেন তাঁদের আমি সহমর্মী ও সমর্থক। লেখাটিকে কবিতা-প্রসঙ্গে ইয়ার্কি হিসেবেই নিন, প্লিজ।)
১৯।
‘মধ্যরাত্রে পচা নর্দমার পার্শ্বে দাঁড়াইয়া এক মনে ১০৮ বার জপ করিবা ‘শালা, শালা, শালা…” সাবধান নাসিকা যেন কুঞ্চিত না হয়—হইলেই সর্বনাশ। এই মন্ত্র জপ করিলে গৃহীর ঘরে তালব্য ‘শ’-র অভাব কদাপি হয় না।‘—
স-কারাত্মক বঙ্গভাষীর প্রতি পানু সিংহ
২০।
‘এই আমি ‘তাকলামাকান’ লিকলুম, মূর্ধন্য ‘ত’ দিয়ে লিকলুম–মুরোদ থাকলে উচ্চারণ করে দ্যাকাও তো বাপু!’
–জনৈকা বাচিক শিল্পীর প্রতি পানু সিংহ
২১।
–“সব শালায় ভুল লিকেচে অতো ব্রাহ্ম ব্রাহ্ম কোরোনা হে, রবি বাবু ঘোর বিষ্ণুভক্ত ছিলেন, রাতের পর রাত বিষ্ণু-চিন্তায় জেগে থাকতেন—বলি, গান শোনোনি? –‘জাগরণে যায় বিভাবরী, আঁখি হতে ঘুম নিল হরি’”—পানু সিংহ
২২।
বুঝলে বাপা, নজরুল! কাজীসায়েব ছিলেন একমাত্তর খালসা মিলনবাদী। শুধু হিন্দু-মুসলমান নয়, ভিন্ন প্রজন্মের সাহিত্যিকদেরও ইন্ট্রোডিউস করিয়ে দিয়েছিলেন–‘আয় বনফুল, ডাকিছে মলয়’
২৩।
‘নিশিরাত, মিনিবাস আকাশে’—পুরিয়াসঙ্গীত বাই শ্রী পানু সিংহ—সিনেমাঃ পৃথিবী মামারে চায়
২৪।
মঙ্গোলিয়ান কবি তদোগেন গিরতের কবিতার পানু সিংহ কতৃক অনুবাদ লইয়া আলোচনায় বিবিধ মায়েস্ত্রো।
‘তদোগেন গিরতের কবিতা আমার উত্তম লাগিয়াছে। পুরো বইটি উপন্যাসপ্রতিম। কবিতা হইতে কবিতান্তরে লেখকের চরিত্র ধীরে ধীরে স্পষ্ট হইয়াছে।‘ –রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
‘এ রকম কবিতা লিখলে মঙ্গোলদের মঙ্গলগ্রহেও স্থান হবেনাকো। থার্ডক্লাস কবিতা–খানিকটা প্রেমেনের গদ্যের মতো’—জীবনানন্দ দাশ
‘হাঃ হাঃ, আমোদ পেয়েছি, তবে আরো আমোদ পেয়েছি ফুটপাথে বিক্রির সময়’—উৎপলকুমার বসু
‘বইটি পড়ার সময় পাইনি’—বিনয় মজুমদার
‘পুরো মাল, ভুজংগবিশেষ, তবে নীরেনদা অনেক বেটার লেখেন’—সন্দীপন চট্টোপাধ্যায়
‘বাল, শুধু বাল’—নবারুণ ভট্টাচার্য
‘ছন্দ কই? মঙ্গোলিয়ায় ছন্দ নেই?’ – সুভাষ মুখোপাধ্যায়
‘কবি চরিত্রবান। মঙ্গোলিয়ায় এমনটি আশা করা যায় না’—আলোক সরকার
২৫।
পানু সিংহ বলিলেন– ‘লম্বোদর তোমার ডায়মনকাট ভেংচি সংবরণ কর। নোবেল নেহাত ফ্যালনা নহে, মনে আছে, কলিকাতার রাস্তায় প্রচন্ড গ্রীষ্মে খোট্টা ফেরিওলা হাঁকিয়া যাইত “নোবেল লিবে গো! তাজা নোবেল!” কালেজের বাবু হইতে উড়ে কনস্টেবল নোবেলে আকৃষ্ট রহিলেও সেই মাগ্যি-গন্ডার বাজারে মানুষের গতিবিশেষ ছিল না, বলি চারি-আনা নগদ দিয়া মানুষ লালশাক কিনিবে না নোবেল! বঙ্কিম পারিলেন না। রাধামাধব গোলদার পারিলেন না। এমন কী হিজ হাইনেস প্রাণগোপাল সরখেলও চারিআনা জরিমানা দিয়া নোবেল ঘরে আনিলেন না। পাগলের মহৌষধ বিক্রয় করিয়া রবিবাবুর বোধ হয় কিঞ্চিৎ আয় হইয়াছিল, প্রয়োজনাতিরিক্ত আয় হইলে মনমাঝে চুলকানি-রোগের উদ্রেক হয়, সেই চুলকানির উপশম না ঘটিলে আয় রূপান্তরিত হয় আয়তনে, রবিবাবু তা সম্যক বুঝিয়া নোবেল কিনিয়া ঘরে তুলিলেন। পাড়াপড়শী দেখিতে আসিল। কেষ্টার মাসী এলোকেশী মুখে আঁচল চাপা দিয়া বলিল—“মরণ”! খোকা অমু বলিল– ‘দাদামশায় কী সুন্দর এই অষ্টধাতুর বর্তুল পদক, আর ঐ তৎলিপ্ট মিশিমাখা-শিখিপাখা চাইনিজ ময়ূরপুচ্ছ হেন মানপত্র! আমারও একটি পাইতে মন করে’। নস্ত্রাদামুস খড়কেকাটি দিয়া দাঁত খুঁটিতে খুঁটিতে তন্দ্রাচ্ছন্ন হইয়াছিলেন। অকস্মাৎ বিষম খাইয়া তাঁহার ঝিমুনি ভাঙ্গিল! নিজব্রহ্মতালুর উপর দৃষ্টিসংযোজন করিয়া কম্পিতকন্ঠে বৃদ্ধ ঘোষণা করিলেন—“দ্রিমিদ্রিমি ত্রিনিতিপৌলস নন্ডনস্কুলে ইকোনমি ইস্কার ব্রভণৌং ভো, পিকদানিটা এগিয়ে দে তো বাবা প্লেটো”। ইহার পর কী হইল তাহা ইতিহাস এবং গালিভার ট্রাভেলস-এ আছে…’
২৬।
এ আঁধার নামুক না, গুঞ্জন থামুক না
প্রাণে তবু রবে তার রেস্ত
ক্কেস তো!
২৭।
জনৈক কবি—-আর্ট, মানে লেখাকেও কমিউনিকেবল হতেই হবে!
পানু সিংহ –কেন বে! আর্ট কী সিফিলিস?
২৮।
পানু সিংহ বলিলেন—‘বুঝলে বাপা, নিরোর সময় ব্যায়লা ছিল না। হার্প বা লায়া (Lyre) ছিল। আর ছিল সহ্যক্ষমতা! বীভৎস তাপ, ‘রোম’ পুড়ে যাচ্ছে–চুলপোড়া দুর্গন্ধ বেরোচ্চে তবু নিরো বাজাইতেসেন আর বাজাইতেসেন–ক্কী কান্ড!’
২৯।
‘ছানার ডালনা’ –একটি ক্যানিবাল কাব্যগ্রন্থ বাই পানু সিংহ
৩০।
রিপোর্টার–So পানুবাবু, what’s your vision?
পানু সিংহ—Focus
৩১।
“’বেলন ডি অর’—ফুঃ, সে আবার কী এমন সম্মান!—ও হোলো গে ফরাসী দেশে নুচি বেলা প্রতিযোগিতার ফাস্প্রাইজ”—পানু সিংহ
৩২।
কথা হচ্ছিল ইউপি-র ব্রাহ্মণদের পদবী নিয়ে। এক ত্রিবেদীর সঙ্গে। সে বলছিল ত্রিবেদী মানে যার তিনখান বেদ পড়া। আমার বক্তব্য ছিল শুধুমাত্র তৃতীয়, অর্থাৎ যজুর্বেদ। আলোচনার মাঝখানে এন্ট্রি নিলেন এক মিশ্রা। মিশ্রাজী বললেন–
১ বাপের পোলা বেদী
২ বাপের পোলা দুবে/দ্বিবেদী
৩ বাপের পোলা ত্রিবেদী/ত্রিপাঠি/তেওয়ারি
৪ বাপের পোলা চতুর্বেদী/চৌবে
৫ বাপের পোলা পান্ডে
জিগাই, ‘মসিয়েঁ মিশ্রা, তাইলে শুক্লাই বা কী আর মিশ্রাই বা কী?’
মিশ্রাঃ অন্তত এক বাপ সায়েব হলে শুক্লা, আর কালাধলাপীলাহরিত মিশ্রবাপের পোলা অইল মিশ্রা! বোজো কান্ড! আমি সান্যালে প্রিএম্পটিভ বার্নল লাগাইতেসি
৩৩।
…আর কবিতায় ভাঙ্গি কাপপ্লেট–
—
ক) সাধনা মাসিমা আর প্রেরণিকা আন্টি
বাংলা কবিতা পরে কমব্যাট প্যান্টি
খ) রবি বাবু বাতে কাবু, কটিতটে ঘুনসি
রোদ্দুরে বড়ি দেয় প্রেমচন্দ মুনসী
গ) যোদো যাবে মাছ ধরতে–যোদোর ড্যাশে ছুলি
মোধো তাতে ছুঁইয়ে দিল অনন্তবুলবুলি
ঘ) অমিত্রাখের–কোই-আহা -বৃত্ত
ক্যানো আসিলে না রমা, ক্যানো আসিলে না!
তোমা-তরে মধুমেহে ভোগে নীলাকাশ
তোমা-তরে রামপাখি, ক্যোঁৎ-পেড়ে সুর ধরে
————-আউয়া আউয়া
৩৪।
মানে বোলছিলম কী, মৌলিক বিসোয় না থাকলে মৌলিক বিস তো আছে! আর্সেনিক, ওই যে চুহা-ফুহা মারে! তা আমার বিসোয়বুদ্ধি বোলে—বিসোয় না থাকলে বিস পিয়ে লিন। রোবি বাবু জেনে সুনে পিয়ে নিলেন, তার পোর তার বিসোয়ও হোলো নোবেলও হোলো, আর বিসের এফেক্ট দেখেন—রোঞ্জন বাবু তো ছত্তিস জেনারেসান বাদ ভী ওহি চুসে চুসে ঢের সারা বিসোয় পেলেন। আরে সোক্রাত সাহিব-এর কোথাই ধোরেন না! রোবি ঠাকুর তো উনার পাস থেকেই সিক্সা নিয়েছিলেন। সোক্রাত সাহিব হেমলোক পিলেন আর পোরের জোন্মে সাইলক হোয়ে ভেনিসে বোসে সুদের কারবার কোরে মালামাল হোয়ে গেলেন! ইসব সেক্সপীয়ারে আছে! আরে মোসাই সুধু এই সোব না। সেক্স আর পীয়ার ভী আছে। ভালো বই, দেখে লিবেন!
৩৫।
রিয়েলিস্ট– মানুষ নিকটে গেলে যে কোনো সারস উড়ে যায়
হাইপাররিয়েলিস্ট–মানুষ নিকটে গেলে প্রকৃত সারস উড়ে যায়
স্যুরিয়ালিস্ট–সারস নিকটে গেলে প্রকৃত মানুষ উড়ে যায়
৩৬।
Although T-Rex
Rhymes well with free sex
And mister Bronto
Gets it pronto
Triceratops takes the cake
…….
Because, well it tops; t(h)rice in a row…
—–
Well don’t blame me. It’s all Ken Ham. After going through his mind-blowing research on how dinosaurs went on shagging, humping, buggering anything in their physical range, be it an aeroplane or a lump of sugar (just coined a new term ‘rompage’) and as a fair repercussion how god didn’t allow them to board Noah’s ark, that led to their extinction by the great flood, I couldn’t help but research on their outrageous sex life.
৩৭।
‘ডিম ছোটো, ক্ষতি নেই, কড়াই তো বড়’
–পানু সিংহ অন the intricate logic often found impregnated in the lyrics of iconic Bangla songs.
৩৮।
আমায় প্রশ্ন করে ধ্রুবতারা পিসি
আর কত কাল আমি…(ইয়ে, মানে, হেব্বি এম্বারাসিং কোশ্চিন!)
–সোর্স; কৌন বনেগা সভাপতি
৩৯।
আঙ্গিনা মে বাবা, দুয়ারে পে মা
মাঝখানে নদী ওই বয়ে চলে যায়!
–মূলধারার বাংলা কবিতা প্রসঙ্গে কবি পানু সিংহর ক্রিপ্টিক কমেন্ট।
–সংগ্রাহকের নোটঃ গেয়ে দেখুন, মিলে যাবে।
৪০।
দাঁড়ালে গল্প, না দাঁড়ালে কাহিনী
——-বাংলা গদ্য নিয়ে কবি পানু সিংহর ইনোসেন্ট অবজার্ভেশান
৪১।
পানু সিংহর অনুবাদকর্ম
ক)
O my eyes are
July and August
Yet my mind is thirsty
Yet my mind is thirsty
খ)
Nest small
No harm
Sky is big though
গ)
‘Live by the কাটি, die by the কাটি
ঘ)
…on four sides, life’s ocean frothing
To me, she gave a 2-stick length of piece
Patna’s Banalata Singh
ঙ)
‘কেবাড়ি বন্দ করকে সুতেলা মহল্লা, তব্বে সুনাই দিলা খটখট কা হল্লা
আবে অবনী, ঘর মে হওবা!’
চ)
‘হাম যা তো সকত হুঁ, পন কাহে যেইবো
বিটোয়া কে থুতনিয়া পে, একঠো চুম্মা খেইবো’
৪২)
অন্যান্য সাহিত্যকীর্তি
ক)
…চারিদিকে বীয়ারের সমুদ্র সফেন
আমারে দু-দন্ড শাস্তি দিয়েছিল
রেভারেন্ড বলহরি সেন…
খ)
তেতলায় পূর্ণশশী
দাঁতে দ্যায় কৃষ্ণ মিশি
শ্যাওলা কলতলাতে
ধপাধাঁই আছাড় খালা
‘আমি যে রিস্কাওয়ালা’
গ)
টাংকি-পার্শ্বে উপবিষ্ট বকাকৃতি ধর্ম্ম
বিটেক্সপ্রলেপে ঢাকা দাদাক্রান্ত চর্ম্ম
কহিলেন—“যুধিষ্ঠির!”
–ইয়েস স্যার!
–সখী, ভাবনা কাহারে বলে?
–সখী, যাতনা কাহারে বলে?
–তোমরা যে বলো…ইত্যাদি ইত্যাদি…
ঘ)
এবার তোর মরা ঝোলে বান এসেছে
জয় মা ব’লে ভাসা বড়ি
ঙ)
যার শিখিপাখা খোঁচাটি দিয়ে
গোপনে মোরে দেরিদা পড়ায়
সে রহে কোথায় হায়—
চ)
এত্তে দিন সে ব্যায়ঠল রহেঁ
রোড দেখেঁ অওর টেম গিনেঁ
মিলবে কিয়ে ফাগন মেঁ
৪৩) কবিতালোচনা
‘গাড়ি’ শব্দ/বস্তুটিকে জীবনের রূপক হিসেবে ব্যবহার ভাবপ্রধান বাংলায় যথেচ্ছরূপে করা হইয়া থাকে, যথা শাহ আব্দুল করিমের ‘গাড়ি চলে না’। তাঁহার ‘কুমোর পাড়ার গরুর গাড়ি’ কবিতাটিতে রবীন্দ্রনাথও গোরুর গাড়িকে জীবনের প্রতীক হিসাবে ব্যবহার করিয়াছেন। এইস্থানে ‘বোঝাই করা কলসী হাঁড়ি’ বলিতে কবি জীবনের আধার অর্থাৎ ‘দেহ’-র কথা বলিয়াছেন যাহা ভঙ্গুর মাটির ‘হাঁড়ি’ ও ”কলসের’ সমরূপ। কবি সুচতুর ভাবে একটি প্রশ্নকে উহ্য রাখিয়া প্রশ্নটিতে তাৎপর্যরোপণ করিয়াছেন (ম্লেচ্ছ ভাষায় যাহারে বলা হয়– সিগনিফায়িং বাই অমিশান)। প্রশ্নটি হইল ‘গাড়ি’ তো চলিতেছে, কিন্তু উহারে চালায় অর্থাৎ স্টীয়ার করে কে? কবি পরের পংক্তিতেই বলেছেন, ‘গাড়ি চালায় বংশীবদন, সঙ্গে যে যায় ভাগ্নে মদন’, এইস্থলে বংশীবদন, অর্থাৎ ‘বংশীর ন্যায় বদন যাহার’,– ধরিলে কবিতার মর্মবোধ হয়। কে না জানে বংশীতে ছয়টি ছিদ্র থাকে—এই স্থলে যাহা ষড়রিপু যথা কাম-ক্রোধ-লোভ-মোহ-মদ মাৎসর্য্য-র প্রতীক। লক্ষণীয়, বংশীবদনের উল্লেখের পরেই কবি ‘ভাগ্নে মদন’-এরও উল্লেখ করেন। মদন অর্থাৎ যিনি রতিদেবীর পতি, অতনু, যাঁহাকে মহাদেব শিবশম্ভো হৃদমাঝারে চুলকানি উদ্রেক করিবার দোষে ভস্ম করিয়া ফেলেন। ‘মদন’কে ভাগিনেয় হিসাবে বর্ণনা করিয়া কবি তাঁহাকে বিশেষ গুরুত্ব দিয়াছেন। ইহা হইতে প্রতীত হয় যে ষড়রিপুর মধ্যে কবি ‘কাম’কেই পৃথিবীর সর্বাপেক্ষা গুরুত্বপূর্ণ চালিকাশক্তি হিসাবে চিহ্নিত করিয়াছেন।
৪৪।
আজকের এ কাচ্চা বাচ্চারা কী জানে। হামাদেরও একঠো বচপন ছিল। তাপস পাল, মুন্না আজিজ। সোল ম্যুজিক। আসানসোল টু জুতোর্সোল। কী লিরিক! আজো মনে পড়ে– ‘পৃথিবী হারিয়ে গেল লুঙ্গির তলায়, মিশরের নীলনদ …’। ‘গোয়ালেতে গরু ছিল, বাঘ ছিল বনে, গান শুনে জড় হল, উঠোনের কোণে’…—নস্টালজিক মুডে পানু সিংহ
৪৫।
কলকাতাঃ
পথ ভাবে ‘আমি দেব’
রথ ভাবে আমি
দেব ভাবে ‘আমি ডেব’–
হাসে অন্তর্যামী
Meanwhile somewhere in Shanghai
‘এক ছুটকি ইন্দুর কী কিমত তুম ক্যায়া জানো পিংপিং সাব’ –-A tail of two cities বাই পানু সিংহ
৪৭।
Lynching doesn’t happen in India. It’s a Chinese thing. Lyn Ching. Get it!—ভারতে লিঞ্চিং-এর ঘটনা সম্পর্কে পানু সিংহ
৪৮।
অতঃপর ওল্ড মঙ্ক দুরাচারী পানু সিংহকে বলিলেন–“টুমি পামর, টুমহার কুনো সমস্যা না আছে, নেক্সট বার্থে যঠার্ঠ বড় লোক হইবা, ধনাঢ্য ব্যক্তির সাউথ-ফেসিং বাথরুমে কমোড হইয়া জন্মগ্রহণ করিবা”—
৪৯।
সালভাদর দালি সম্পক্কে দু’কথা
—
পিতাঃ দালিবাবা
মাতাঃ দালিমা
জায়াঃ দালিয়া
পূত্রঃ দালিম
কন্যাঃ রুদালি
৫০।
পানু সিংহ-র প্রিয় বই
১। ক্রাইম অ্যান্ড ফেলিসিটেশান- অসাম সরকার
২। ডাবরের প্রার্থনা—বঙ্কু ঘোষ
৩। যদি তেল দিলে না কানে?—বরীন্দ্রনাথ ঠাকুর
৪। টু কিল আ চোকিং বার্ড—হান্সি ক্রোনিয়ে
৫। টোয়েন্টি থাউস্যান্ড লেগস আন্ডার দ্য বেডকাভার—ভুলে জার্নে
৬। মবি! ইজ দ্যাট আ জাইগান্টিক… ইয়ে মানে… ডিক?—মারম্যান হেলভিল
৭। টেন ডেজ দ্যাট শুক দ্য ওয়ার্ল্ড অ্যান্ড নট আ ড্রপ ওয়াজ ওয়েস্টেড—জন রিডার
৫১।
পোস্টমডার্ন স্পিরিচুয়ালিসম; ডম্বরুধরের পোস্টমডার্ন থিসিস- বাই পানু সিংহ
(লেখা সংগ্রহঃ সব্যসাচী সান্যাল)
সংগ্রাহকের জবানবন্দী
[দুপুরে ১২, ভোরে ৩, গত বেশ ক ‘দিন । ধ্যান, ধারণা, ব্রহ্মসঙ্গীত, মেডিটেশানে কাজ হল না। নাকে নির্ঝরের স্বপ্নভঙ্গ। কাঁপতে কাঁপতে ভাবলুম – পারলে রবি, না পারলে র্যাঁবো। শ্রদ্ধেয় পঞ্চাশী-কবিরা পথ দেখিয়েই গেছেন—কবিতা আসুক না আসুক—খালাসীটোলার যাত্রী মাত্রেই কেঁদো কবি! তাছাড়া চিরকালীন এলিটিস্ট ওঁচাবিত্ত বাঙ্গালির বিদিশি-প্রীতি থাকবে না – হয় না কী! ট্যারা পঞ্চু জাতে মাতাল তালে কেলুচরণ – সেও প্রোমোটারি করে বেশ কিছু পয়সা কামিয়ে বললে – “দাদা, এবার থেকে “মোদো-পঞ্চা” বলে ডাকলে সাড়া দেব না কিন্তু, নতুন নাম নিইচি – ফ্রেঞ্চ—“কোয়াসিমোদো”— আজকাল ওয়াইন খাচ্চি তো!” ইদিকে আমার উজবেক গুরু ওতাবেক ইমামভ দীর্ঘকাল আগে বলেছিলেন – “বাণী মনে রেখ হে ইন্ডিশ – কাঁপুনি বাগে না এলে, একমাত্র দাবাই নির্জলা ভোদকা উইথ গুঁড়ো শুকনো লংকা”। গুরুজী ডাক্তার মানুষ, অশ্বিনীকুমারদ্বয়রে বাটিয়া স্টেথোয় লাগাইয়াছেন — সুইডেন, নরওয়ে সর্বত্র তাঁহার দাবাই মোক্ষম ফলপ্রসূ – কিন্তু ওই রাশান দাবাই যেই ভারতে আসিল সেইমাত্র অকার্যকর – দুর্ভাগ্য, ভারতে কম্যুনিজমের দশা অধমের মাথায় ছিল না। রাশান ছাড়া তাবৎ বিশ্বের ডাক্তারি শাস্ত্র বলে – অ্যালকোহল ইমিউনিটি কমায় – পোক্ত ডিপ্লোম্যাটরেও যথেচ্ছ দারুপান এয়ারপোর্টে ঝামেলায় ফেলে (পরীক্ষা না করে কথা বলি না মোশাই )। যাক, সেই যে রাশান দাবাইয়ে নাক টিপে লক্ষী (ইমিউনিটি) হাপিশ হইলেন, ফেরার নাম নাই । জ্বর, জ্বালা, কাশি, হাঁচি, গাঁটে ও মাথায় ব্যাথা – ইতিমধ্যে ছোকরা সম্পাদকের আদেশ – “দাদা, “ম্যাকারেল”-এর জন্য কবিতা নিয়ে গদ্য লিখতে হবে”। ইমিউনিটি ডাউনের কারণে মস্তক আপনা হইতে কাত। — “তবে, আপনার ওই তোড়-ফোড় মার্কা কলমে হবে না, ধীরে সুস্থে, রেস্পন্সিবল লেখা লিখুন—অনেক লোকে পড়বে”। মাইরি, মনে হল জ্যাঠামশাইকে দৈবাদেশ – “খড়ম পায়েই রাখবা আর পা য্যান জমিন ছাইড়া এক বিঘৎ-এর বেশি না ওঠে!”। ইমিউনিটি ডাউন – মাথা কাত, নাক দিয়া মেঘনা যমুনা (আর ইমিউনিটি ডাউন হলে মানুষ করে না এমন কাজ আছে না-কী! জন্মদিনে হাতি গিফট পেলে ব্যাজার মুখ করে সিঁড়ির তলায় কলাগাছ পোঁতে, বিষম কেলোয় পড়ে খুক খুক করে গান গায় – মরণ রে তুঁহু মম টাংরি কাবাব)। ফলে সেটিরিজিন, ফলে কোডিন ফসফেট আর তারপর যা হয় আর কী– হুলিয়ে ঝাপসা! আয়নায় নিজের মুখ না দেখতে পেয়ে বুঝলুম—অহো, যার-পর-নাই অবজেক্টিভ হইয়াছি, তদুপরি শান্ত, হাফ-সমাধিস্থ – হাঁ এইবার রেসপন্সিবল লেখা, ল্যাখা যায়!
তা যাক, লিখতে গেলে পড়তে হয়, তত্ত্বালোচনা বিশেষ করতে হয় – মানে কবিতা লিখতে গেলে ওসব না ভাবলেও চলে, কিন্তু কবিতা নিয়ে গদ্য লিখতে গেলে কেস গুপিনাথ। ফলে ড্যান্ডি টু ডাডা টু লেডি গাগা সব পড়ে ফড়ে মনে হল—পাইছি ! কবিতা ইজ আ বাইপ্রোডাক্ট অফ …—মাইরি! এরপর একান্ন দফা শ্রাদ্ধ প্লাস সরস্বতী পুজোর ফর্দ নামতে শুরু করল! এই শীতে ঘামতে ঘামতে ভাবলুম – মধু-দা’র গতি না হয় ! শ্যাসে বিলাইতি ছাইড়া কপোতাক্ষ নদ (বাই দ্য ওয়ে কপোতের চোখের মনি কিন্তু বেশীর ভাগ ক্ষেত্রেই লাল – লালজলের নদ –দামোদর না রামোদক – সে আপনিই বুঝবেন, আমারে ঘাঁটাইয়েন না)। তা ঘামলে একটু খিদে-খিদে পায় – অতএব হাংরি আন্দোলন। তা, হাংরি বলতেই ক্যাপিটালে মলয় রায়চৌধুরী, একটু আধটু সমীর রায়চৌধুরী – মিডিয়াম অক্ষরে শক্তি চট্টোপাধ্যায়, দেবী রায় (হারাধন ধাড়া), উৎপলকুমার বসু, বিনয় মজুমদার, সন্দীপন চট্টোপাধ্যায়, বাসুদেব দাশগুপ্ত, ফাল্গুনি রায়, ত্রিদিব ও আলো মিত্র, আর পড়া যায় না এমন ফন্টে শৈলেশ্বর ঘোষ, সুবো আচার্য্য, সুভাষ ঘোষ, রামানন্দ চট্টোপাধ্যায়, অনিল করঞ্জাই, করুণানিধান মুখোপাধ্যায় আর বিলকুল হাওয়া হয়ে যাওয়া অক্ষরে সতীন্দ্র ভৌমিক। ইতিমধ্যে হাতে পড়লো শৈলেশ্বর ঘোষের, “ঘোড়ার সাথে ভৌতিক কথোপকথন”—আর খুঁজতে খুঁজতে আচমকা এক পুরোনো শারদীয়া “কবি সম্মেলন” পত্রিকায় অর্ণব সাহার নেওয়া শৈলেশ্বর ঘোষের ইন্টারভিউ। শৈলেশ্বর এক জায়গায় বলছেন “মলয় রায় চৌধুরী ব’লে কাউকে চিনতাম না, দু একবার কলকাতায় দেখেছি”, “মলয়, সমীর বা ফাল্গুনি-দের লেখা আমার কোনদিনই ভালো লাগতনা”, …শক্তি চট্টোপাধ্যায় ও আমি হাংরি আন্দোলন শুরু করি। বাকীরা…”। পড়ে ফড়ে তো চক্ষু ফক্ষু গোলা ময়রার জিলিপি! দেহ ভর্তি সন্দেহ নিয়ে বিখ্যাত প্রান্তিক ঐতিহাসিক পানু সিংহ’র বৈঠকখানায় হাজির হলুম। পানু বাবু গুণী মানুষ, পিতৃপ্রদত্ত নাম ছিল ঋতুপর্ণ সিংহ, প্রান্তিক ইতিহাসে এম ফিল ক’রে ব্যাঙ্কশাল কোর্টে এফিডেবিট মারফৎ যুগপৎ প্রান্তিক ও রাবীন্দ্রিক নাম গ্রহণ করেছেন। রিসেন্টলি কিনিয়া গেছিলেন—প্রান্তিক জিরাফ (যাঁরা ঘাসে রুচি রাখেন) -দের জন্য শ’য়ে শ’য়ে আঠেরো-হাতি ট্রেঞ্চ খুঁড়ে এসেছেন (সাফারির গাড়ি দমাদ্দম গাড্ডায়—এ খবর সি এন এন-এ)। পানুবাবু মেঝেয় বসে—বকের ডানার কলম দিয়ে তেজপাতায় কী সব লিখছিলেন। সব শুনে বললেন– “দ্যাকো বাবা, শৈলেশ্বর যে হাংরি আন্দোলনের শুরুতে মলয়, সমীর কাউকে দ্যাকেননি সেটা কী খুব আশ্চর্যের ব্যাপার? তুমিই বল, বাতাস কী দ্যাকা যায়! ধুলো না উড়লে! বিস্তর কেলো হল, ধুল-ধামাকা হল, তকন গিয়ে মলয়, সমীর দ্যাকা পড়লেন, চোকের বালি হয়ে দ্যাকা পড়লেন, চোক কটকট করিয়ে প্রকট হলেন।” “তা বাবা খেতে দেতে তো পাও—নাকী! হাংরি নিয়ে এমন পেচন ব্যাথা কেন?” বল্লুম, “পত্রিকার আদেশ, কবিতা নিয়ে গদ্য লিখতে হবে”। পানু বাবু ভাবলেন। খানিকক্ষণ আরো ভাবলেন। তাপ্পর উচ্চকিয়ে বললেন, “কবিতার কী দরকার ! প্রান্তিক থিসিস লিকচি—সেটা ছাপার ব্যবস্তা কর না বাপু !” বল্লুম, “ওনারা মনে হয় মেনস্ট্রীম, প্রান্তিক জিনিস নেবেন কী?” পানু বাবু রেগে কাঁই – বল্লেন, “পাঁটা নাকী! সীতা আউর গীতা সিনেমার আগে রামায়ন, মহাভারতও প্রান্তিক ছিল, অ্যাকন দেকেচ কী রমরমা!”, বাউল গানের মেন্সট্রীমাইজেশান দ্যাকোনি! “নিমন্ত্রণের” জায়গায় “টেলিফোন” বসিয়ে দিলেই চাদ্দিকে চমকে হু-হা করে চলে”। ভাবলুম, কেস মন্দ নয়, নিজের লেখালিখির হাত থেকেও মুক্তি পাব, আর প্রান্তিক মাল সাপ্লায়ার হিসেবে নাম-টাম নির্ঘাত চিত্রগুপ্ত সায়েবের খাতা ছাড়াও কোথাও না কোথাও লেখা থাকবে—তা, রাজী হয়ে গেলুম। বাকী-টা বাজারের ডিসক্রিশান, ম্যাকারেল না নিলে সার্ডিন আছে।]
পোস্টমডার্ন স্পিরিচুয়ালিসম; ডম্বরুধরের পোস্টমডার্ন থিসিস বাই শ্রী পানু সিংহ
ভিজা বাতাস বহে মৃদু মৃদু
ডোবার সৌরভ পাদুপাদু
ভিজা বাতাস মৃদু বহিতেছিল। ভেকগণ জলমাঝে গনোরিয়া-গনোরিয়া খেলিতেছিল। সরোজিনী ঘোষবাবুদের রাজহাঁস চুরি করিতেছিল। দূর্লভী বাগদিনি আট-হাতি মুর্শিদাবাদী গামছায় তনু ঢাকিয়া প্রাচীরে সশব্দে ঘুঁটে দিতেছিলেন। অরণ্যদেব শসার টুকরা শেষ করিয়া মাঝে মাঝে তৃষিত নয়নে শসার বাটির দিকে নজর দিতেছিলেন, দীর্ঘশ্বাস মোচন করিতেছিলেন, এবং উদাস রূপে বিচি চুলকাইতেছিলেন। ডম্বরুধর এক চক্ষে সরোজিনী অপর নয়নে দূর্লভীরে ব্যালেন্স করিতে করিতে শসা চিবাইতেছিলেন ও শসার বাটিখানি আগলাইতেছিলেন। ডম্বরুধরের বয়স নব্বই, চেহারা নেগেটিভ মাকাল ফলের ন্যায়, ঘোর কৃষ্ণবর্ণ ও সারাজলাভাবে যারপরনাই শুষ্ক। দীর্ঘকাল তাম্বুলসেবনহেতু তাঁহার ওষ্ঠাধরের সংযোগস্থলে দুইটি শাদা লম্বা দাগ—দেখিলে মনে হয় সেরেস্তার কাগজভক্ষণ করিয়া দুইটি শুঁয়াপোকা শ্বেতআমাশাক্রান্ত হইয়া বিষ্ঠাত্যাগ করিতে করিতে হড়কাইয়া নামিয়া গেছেন। অরণ্যদেবের চেহারা বা বয়েস মুখোসের আড়ালে প্রতীয়মান হয় না, তবে দিব্য বোঝা যায় মুখোসটির বয়স বেশ খানিক হইয়াছে। কথিত, এই সুন্দরবন সংলগ্ন জনপদে প্রাক্তন অরণ্যদেব (কীট) ও ডায়নাপূত্র নব্য অরণ্যদেব, বোম বেটে খান নামক মগ জলদস্যুর মোকাবিলায় আসিয়া, স্থানীয় সুন্দরী বায়না আলম-এর সৌন্দর্যে মুগ্ধ হইয়া লভ ম্যারেজ করেন ও পাকাপাকি ভাবে এই দেশে রহিয়া যান। অরণ্যদেব বিবি বায়নার নিমিত্তে সকাল হইতে ডোবা সংলগ্ন জংলা এলাকা হইতে এক বোঁচকা হিঞ্চে ও কলমী শাক তুলিয়া বাতে কাবু হইয়াছিলেন। তদুপরি তাঁহার একমাত্র পোশাক, উত্তরাধিকার সূত্রে প্রাপ্ত পাতলুন ও জাঙ্গিয়া দীর্ঘকাল সাবাং-এর মুখ দেখে নাই এবং বাঙ্গালামুলুকের আর্দ্র জলহাওয়ায় তাহা ঘামিতে ঘামিতে, দৈহিক নিঃসরণের সাথে মিলিয়া মিশিয়া আনাচে কানাচে প্রস্তরের ন্যায় হইয়া উঠিছে। ফলে কুঁচকিতে দাদ। অরণ্যদেব তাঁহার অঙ্গুরীয়দ্বয় বন্ধক রাখিয়া দাদের মলম কিনিয়াছিলেন – এক বেটা ডুপ্লিকেট ঢোল কোম্পানীর মলম, বিশেষ সুরাহা হয় নাই। বাত ও দাদে যার পর নাই ব্যাতিব্যস্ত অরণ্যদেব ডম্বরুর কাছে প্রতিকারের নিমিত্তে হাজির হওয়ায় ডম্বরু তাঁহাকে সাদর সম্ভাষণে খাটিয়াতে বসিতে দেন ও নিজ বাটি হইতে এক কুচি শসা অফার করেন। শসার কুচি বেমালুম হজম হইয়া গিয়াছে। ডম্বরুধর এক চক্ষে সরোজিনী অপর নয়নে দূর্লভীরে ব্যালেন্স করিতে করিতে শসা চিবাইতেছেন ও শসার বাটিখানি আগলাইতেছেন। দূর্লভী বাগদিনি আট-হাতি মুর্শিদাবাদী গামছায় তনু ঢাকিয়া প্রাচীরে সশব্দে ঘুঁটে দিতেছেন। সরোজিনী ঘোষবাবুদের রাজহাঁস চুরি করিতেছেন। ভেকগণ জলমাঝে গনোরিয়া-গনোরিয়া খেলিতেছে। ভিজা বাতাস মৃদু বহিতেছে।
ডম্বরু বলিলেন—“এই যে আমার বদন দেখিতেছ ইহা বর্তমানে বাদুড়ভুক্ত নষ্ট মাকালের ন্যায় হইলেও এককালে আমারো চেহারা কালা সায়েবের ন্যায় ছিল। আমার হেডে এখন দুই এক গাছি শণের নুড়ি দেখিতে পাও বটে, কিন্তু সে কালে আমার টাক চকচক করিত আর লোকে বিস্ময়ে মুখ হাঁ করিয়া তাকাইয়া থাকিত, মাছিগণ সেই হাঁ-য়ে প্রবেশ করিয়া ডিম পাড়িয়া যাইত, মাছির ডিম খাইতে হামিং বার্ড আসিত তথাপি লোকজন হাঁ বন্ধ করিতে পারিত না। এই হাঁ রোগে আক্রান্ত হইয়া বাংলাদেশে মড়ক শুরু হইলে খান বাহাদুর শায়েস্তা খানের অনুরোধে খোদ হানিম্যান সায়েব আসিয়া নাইট্রেট নামক হোমিও দাবাই প্রয়োগ করিয়া বঙ্গদেশ-কে রক্ষা করেন। পাড়ার আঁটকুড়ের ব্যাটা, ব্যাদড়া ছোড়ারা কালাচাঁদ, টাকবাহাদুর, টাকচৌধুরী, টাকদুরুদুরু, টাকাম্বুজ বলিয়া আমারে খেপাইলেও সে টাকের জ্যোতি নিয়া স্বর্গ, মর্ত্য, পাতাল বা শংকরের কোন সন্দেহ ছিল না। ডার্ক ম্যাটার নিয়ে সায়েব বেটারা যে আজ এত মাতামাতি করে সে আমার টাকের খুসকি। হুঁহুঁ বাবা! বাত ও দাদ নিয়া আমার নিকটে চাল মারিও না। পাড়ার কেষ্ট মন্ডল একবার ঘোরতর বোগদাদি বাত ও দাদে পীড়িত হইয়াছিল সেই বাত হইতে রবিঠাকুর “বাতায়ন” ও বঙ্কিমচন্দ্র “দাদখানি” শব্দগুলি আবিষ্কার করেন। সেই বাত ও দাদ আমারই সৃষ্টি । আজ দুইপাতা ইংরাজী পাঠ করিয়া ইয়াং ছোকরারা আমারে পূরাতন বৃদ্ধ বলিয়া অবহেলা করিয়া থাকে – কিন্তু তাহারা এ বিষয়ে জানেও না যে পৃথিবীর ছয় ছয়টি বিশ্ববিদ্যালয় ঘুরিয়া এই শর্মা, আধুনিক, পরাধুনিক, উত্তরাধুনিক, রিলিজিয়ন ইত্যাদি ব্যাপারে প্রভূত জ্ঞান অর্জন করিয়াছে। এই দুইমাস পূর্বে ক্যানিং লোকালে সীট নিয়া বচসা হইলে এক ছোকরার খাতা আমি বলপূর্বক কাড়িয়া লই, তাহাতে অনেক গম্ভীর গম্ভীর ইংরাজী কথা রহিয়াছে—ওই লেখা পড়িতে পড়িতে আমার তিন চারটি দাঁত ভাঙ্গিলেও, আমি সেই লেখাকে হাত ছাড়া করিনাই – মনে স্থির করিয়াছি এই সব ভারী ভারী বাক্য লইয়া দক্ষিণবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় হইতে পি এইচ ডি করিব। এই বুড়া বয়সে ডাক্তারি পাশ করিলে বিপদে আপদে চিকিৎসা করিয়া জীবননির্বাহ করিতে পাইব। তদুপরি খবরের কাগজে নাম উঠিলে আমাকে নিয়া মস্করা করিতেও কেহ সাহস পাইবে না। ভাবিতেছ গুল! এই নাও, আমার গবেষণার কিছু শ্রবণ করিয়া চুলকুনি ও ব্যাথার উপশম কর।“
কবীরা খড়া বজার মে, দেহুঁ লন্ড লটকায়
জিসকো জিতনা চাহিয়ে, কাট কাট কে লে যায়
———————————
…spirituality was not my cup of tea either, but then life has this habit of biting you in your unmentionables. I turned spiritual at the beginning of this millennium and I am pretty proud of the fact that at any given time and place I’ve at least a pint of vodka coursing through my blood and almost half of it has passed through the blood-brain barrier and is playing “snakes and ladders” with the astrocytes.
জীবন মানে হয় উকো (Occult) নয় ফুকো (Foucault). উকো মডার্ন, ফুকো পোস্ট, উকো স্ট্রাকচারাল, ফুকো পোস্ট – উকোয় আর কী কী করে/করতে পারে লিপিবদ্ধ নয় (বটতলা-বেসড বাপি তান্ত্রিকের সাথে কথা বলতে পারেন) তবে গরুকে ফুকো মারলে দুধ হয়—এ মোটামুটি খনা’র সময় থেকে সাধারণ জ্ঞান।
Life is a bummer, even “god” was sure of it, I guess, so he invented “death”, a clockwork device that goes “aha aha” at the slightest provocation—shut the fuck up and don’t you bloody dare give me that oblique stare—so what was I saying! Oh, yes, life is a bummer and has this habit of biting you at your unmentionables bypassing all order of things. Well, what else can one do than turn spiritual and look for a structure (even where emptiness stares back with inten-fucking-sity). Structure is business and “post-structure” is a business-proposition, ditto for modern and post-modern. For example, my eldest son (all 10 years of wisdom hammered and cajoled into a four-feet, few inches, 25 Kg frame) is a modernist, he wants to buy a lot of Jeans and biceps and all things shining and trendy to impress girls and my youngest couple of sons (aged 30 months) are post-modernists, i.e they are prone to thud thud, bang, crash and shatter everything within their reach. Let me remind you again, modern is business and post-modern is business waiting- to-happen (because if you really really need something done you don’t usually leave it to the post-modernists). Now both leave a gigantic crater in your pockets. But you see, life is so much better, if that crater is filled with spirit (read Vodka)—and that essentially reinforces my conviction to convert to hardcore spiritualism.
Order Order! “order” is the word of the day since time started taking a piss (which essentially is at the beginning of time). The point is, don’t look for a point in a structure or “post-structure”. A point simply doesn’t exist {remember big-bang ! it ate through all the points, if some scattered ones remained hidden in the jungles of Africa, King-Kong got to them first, leaving none for Tarzan of the Apes; Tarzan had to be content with Zen (often misspelled as “Jane”) instead }.
It’s time we get to know “spirituality”. Spirit flows, a point could never do that even when trained by Michael Jackson. A point is individualistic, stubborn, at your face, while spirit in one form or other crosses every barrier (vampires have a knack of doing that too, or for example a sublime fart)—social or otherwise, hence spirit is the ultimate “sociocrat”. It’s important to note here, all types of “Crats” are species of rats that prefer a prefix ending obligatorily with a “C”, probably to shock a cat, I mean “crat” definitely sounds a lot bigger, meaner and ominouser than a cat. And remember, curiosity kills the “crat”, I mean whether you are a demo version of a crat or a social, or a hypocritical one or for what it matters an “aristo” (whatever it means other than “unambiguous”)—curiosity shouldn’t really be your poison.
If you are curious enough to ask for a point, you are shown a large wooden stake with a diamond-tip that should penetrate almost anything with an imaginable thickness. You ask for a confirmation to your theory on “Relevance of Stockholm syndrome in an apparent constitutional democracy and the evolution of interrelation between the exploiters and the exploited” – you will be given a mathematical answer that outweighs “one metric ton” and comes with this state-of-the art logic of a 200 meter long dead-bolt and basically the whole metric system dangling from it (it’s called statistics).
Spirit is alright though, better if methylated, spirit symbolizes religion, it symbolizes the mean of your mean-ness plus/minus standard rate of errors. See, religion with the right amount of economics absolves everything, including gravest errors, and error bars are always used as crowns of the means.
Deep down we know everything ultimately goes to the pigs, i.e transformed to shit, theories, principles, undigested coconuts and fish guts, and the Newton’s laws of physics (especially in the true spirit of things), after a bit of digestion. However, post-modernism is a process of making the same shit at a faster pace, i.e. without the “digestion” part. In truth, too much spirit may modify your gastro-intestinal tract (not to mention liver) in the most favourable manner so that nothing of this worldly muck is absorbed. That kind of cuts spiritualism and post-modernism out of the same piece of lingerie—so that they can start arguing from a position of equal footing, atom by atom… Like the mirror image fighting its mirror image…
পানুজীবনী
নতুনের কোন চাপ নেই। জন্মের পর মামাবাড়ি থেকে আমার নাম রাখা হয়েছিল “নতুন”। আমার কোন চাপ নেই, তাই নতুনের কোন চাপ নেই। আমার কোন চাপ নেই, কারণ আমাকে নিয়ে কারো চাপ নেই।
স্কুলে, ভূগোলের মাস্টারমশাই বলতেন—“বাংলাটা তোর ভালো আসে, ওটাই পড়িস”। বাংলার শিক্ষক বলতেন—“সায়েন্স, বুঝলি! ওই স্ট্রীমেই তোর ভবিষ্যত”। বিজ্ঞানের স্যার বলতেন—“ইতিহাস আর অর্থনীতির একটা কম্বো নিতে পারিস, এই বিষয়গুলোতে তোর একটা ইনহেরেন্ট ট্যালেন্ট আছে”।
পরবর্তী কালে কবিবন্ধু ও কবিজ্যেষ্ঠ-রা বললেন “রম্যরচনায় তোর হাত ভালো”, গদ্যকাররা বললেন– “তোর লাইন কিন্তু কবিতা”— কেউ তার নিজের লাইনে রেখে আমায় অর্থকর করে তুললেন না। তাই আমিও চাপ নিলাম না। আমি আজো জানিনা, আমি ভূচর, জলচর, নভোচর, না-কী প্লেন অ্যান্ড সিম্পল খচ্চর।
সম্পাদক লেখা চেয়ে চাপ নিলেন না। আর আমি, কনফিউজড লেখক, লেখা দিয়ে সম্পাদকের চাপ বাড়ালাম না। এই বেশ। এই শ্রেষ্ঠ। যাঁরা বলেন চাপে হীরে তৈরী হয়—তাঁদের অভিনন্দন।