কেরোসিন
ক’ফোঁটা কেরোসিনের অভাবে
আমি কেমন উদাস হয়ে যাই।
অবাক আকাশে
চিড় ধরা মেঘ,
আঁচড়ে আঁচড়ে
বেদনার রং হয় আঁধারের মত।
বিরহ আমার –
বোনের চোখেদের মত;
ওড়নার গায়ে ফেঁপে ওঠা
ফ্যাকাসে বেগুনী ফুল।
-আর ক’ফোটা কেরোসিনের অভাবে আমি
খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে ঢুকে পড়ি লোকালয়ে।
কেরোসিন বিক্রেতা কখনও
জানতে চান না – এ আগুন কোথায় জ্বলবে।
বিছানায় একদল প্লেটোনিক চাঁদ
আপনার
চাদরের রং-এ যৌনতা ছিল;
আপনি দেখেও বলেছেন দ্যাখেননি।
কালচে ঠোঁট, মাপজোখ, উষ্ণতা–
আপনি বিস্তৃত ডোবা, আনাচে কোনাচে আকাশ
চষে ভেবেছেন আটাত্তর বার;
আপনি ছুঁয়েছেন চুল,
কামিয়েছেন রাত্রি, অথচ বলেছেন – ‘ থাক, বরং!’
পকেটভরা আগুন নিয়ে ধার করেছেন ধোঁয়া
অষ্টাদশীর ওষ্ঠ থেকে।
আপনি স্তনের মিছিলে শাসিয়েছেন পৌরুষ,
ভরিয়েছেন ফ্রিজ শিশুতোষ পানীয়তে।
আপনার দুইরঙা চাদরে
পরম মন্ত্রে শুইয়েছেন কিছু প্লেটোনিক চাঁদ।
আপনি ভেবেও ভেবেছেন ভাবেননি,
বেঁকিয়েছেন ঘাড়, আর ভিজিয়েছেন নখ রমনীয় শিশিরে।
– কেউ দেখে ফেলেনি।
আপনি সরিয়েছেন পর্দা,
খারাপবেসেছেন প্রেম, ভেবেছেন আবার,
তবু বিছিয়েছেন জিভ;
কেউ দ্যাখেনি-
তখন আশপাশ চারপাশে
কোন কবি ছিলেন না।
দৌড়বিদ
খুব ভালো যাচ্ছে দিন রাত,
যখন তুমি মোটামুটি অ্যান্টেনার মত প্রশস্ত।
– ঘাসগুলি পাশাপাশি,
প্রচন্ড ঘেঁষাঘেঁষিতে বেশি ভালো ধরে।
সোফার পেছনে আছেন একজন বাঘিনী,
তিনি হঠাৎ কুঁচকে ওঠেন;
আমার মহিষগুলি সামনের দিকে সরে আসে আরেকটু।
তোমাদের স্তনগুলি হৃদয়পিণ্ড থেকে দূরবর্তী কোথাও বিছিয়ে রাখবা?
ওইখানে শুধু নিবার্চিত ব্যক্তিবর্গেরা , , ,
-সিলিং এর গায়ে একটু বাদে বাদে ফোসকা;
এক ফোঁটা পানি চোখের সামনে বড় হচ্ছে,
ভারী হচ্ছে,
একটু পরে গায়ে লাগবে।
যা কিছু, বৈদেশিক, তা কিছু কি অপ্রকৃতস্থ?
– বাঘিনী দাঁড়ালেন;
যা কিছু নিজের থেকে দূরবর্তী, তা কিছু আধুনিক?
– পেছনের দিকে শুয়ে পড়ল একটা দুর্বল মহিষ;
বাঘিনী ছুটছেন;
আমার মহিষগুলি সব পেছনের সারি থেকে সামনের দিকে
সরে সরে আসতে চাচ্ছে।
জলজ
তারপর, এই যেমন ধরো
ঢুকে পড়ে একটা মণ্ডূক কূপের ভেতর।
-কেন ঢুকে পড়ে?
-ধরো
শ্যাওলাকে মনে হবে বৃক্ষ,
কিছু কিছু শব্দকে মনে হবে সুর।
-হঠাৎ হঠাৎ উপর থেকে
অপ্রস্তুত স্তনের মত
উঁকি দিয়ে সরে যাবে চাঁদ।
তারপর
স্বপ্নের পেছনে থাকলো কল্পনা,
কল্পনার পেছনে আয়না,
আয়নার পেছনে পারদ।
-ধরো
লেপ্টে আছি যেমন পারদ হয়ে
তোমার আয়নার পেছনে,
মাঝে মাঝে মেঘের মত তাড়া নিয়ে
তুমি সরে যাবে বলে।
কোন কোন রাত্রিকে মনে হবে ধরো ‘গভীর’–
যেমন- ফাটলের মত;
অথবা খুব ধারালো গিরিখাত।
যদি ফাটলগুলো থেকে গজাতো নিপুণ জোড়া ওষ্ঠ,
আঁচড়গুলোকে বলা গেলেও যেতে পারতো প্রেমদাগ,
অথবা ধরো-
যেমন শুয়ে আছে মণ্ডূক কূপের ভেতর,
-কেন শুয়ে আছে ?
মদ্যপ ও ১৪৪
-কিছু শিশ্ন বখাটে হয়ে থাক,
দুমুখো রক্তপুঞ্জ জমাট বেদনা হয়ে দাঁড়ালে
আমরা যেন নিশ্চিত জন্মের দিকে এগুতে পারি।
১৪৪ এর রাতে
আমি কেন হঠাৎ ভিজে যেতে চাই?
ধারালো ব্যাজ, নিশানা আর প্রতিধ্বনি
অসংখ্য শূন্য খুলির ফাঁক গলে গলে
কেন খুঁজি যকৃতের অবক্ষয়?
-কিছু মস্তিষ্ক ভারসাম্যহীন হয়ে যাক,
ভারসাম্যতার জগত শুরু হোক
এই ঘরের ওই দরজার বাইরে থেকে।
-কিছু চোখ খুঁজে বেড়াক
অদেখা একটা রং-
স্পেকট্রামের বাইরের, বেদখল কম্পাংকের।
বৃক্ষের গায়ে বাদামী স্তন,
বা মূর্ছার সাথে চেতন-এর সঙ্গম।
—————————–
“তুমি-
ভুল নিশীথে তৃষিত হয়ো না।
ভুল বাগানে হেঁটো না।
ভুল পুষ্পে লইও না আরোমা।”
—————————–
১৪৪ এর রাতে
তাক করা ধাতব নলের সামনে
প্রণয়ীরা কি বুঝে তরলের খোঁজে বের হয়-
-জরায়ুরা যেখানে হিসেব কষে সেরে উঠতে পারে না;
-জরায়ুরা যেমন মনোবিজ্ঞান বোঝে না।
ঐচ্ছিক উড়াল সামগ্রী
ভাবতেছি একটা কুকুর কিনব।
এইরকম ব্যাপক বিষণ্ণতায় ইদানীং আমার
একটু উদাস হয়ে যাওয়া দরকার।
এইখানে প্রিন্স এডওয়ার্ড ভায়াডাক্ট এর নিচে দাঁড়ালে
আমি ভ্রু কুঁচকে একটু মৃত্যুর গন্ধ নেই,
ঝাঁপিয়ে পড়া শ’চারেক লোকের চিহ্ন খুঁজি।
ইচ্ছামৃত্যুর সাথে কেমন যৌনতার যোগসাজশ আছে;
যৌনতার সাথে ফুল।
আমার ভালো লাগে খুব স্বাস্থ্যবতী ঘাস,
অতীতের সামনে বিছিয়ে রাখা শুকনো ফুলের ডাঁট।
এইখানে আছে ব্লেড, ডায়েরি, খুব ধারালো পেন্সিল,
আরো অন্যান্য যন্ত্র;
-আহা, নেক্রোফিলিয়া! উপর থেকে নেমে আসলে কোন
মৃতপ্রায় বেদনাবিলাসী রমনীর উরু;
ছিঁটকে এসে পড়তে পারে উড়ন্ত অন্য কারো গা।
অর্থহীনতার ভেতর অর্থবহতা,
বা অর্থবহতার ভেতর অর্থহীনতা,
-বা
খুব সরল কোন মৌল বা তার সমষ্টির
ভাবগত আধুনিকীকরণ হতে পারে একটা শৈল্পিক বিষক্রিয়া।
-বিরহ জাপটে ধরলে আমি
ভাবতেছি, পাহাড়ের গোড়ায় একটা রঙিন বেলুনের দোকান দিব।
[@@@ Prince Edward Viaduct আমার সবচেয়ে কাছাকাছি অবস্থিত Suicide Magnet. A 1997 report from the Schizophrenia Society of Ontario cited the average of “one person jumping from the bridge every 22 days.” After years of controversy, the bridge’s reputation as a “suicide magnet” eventually led to the construction of a suicide barrier called the “Luminous Veil”. অবশ্য barrier টা বানানোর পর এখানে suicide হতে পারেনি আর কোন। @@@ সূত্রঃ wikipedia.]
সাবলীল মাংসাশী নগরে
ভেবেছি তোমাকে,
যখন দেখেছি-
দু’জোড়া হ্যাঁ-বোধক ফুলকপি
গা লেপ্টে দাঁড়িয়ে আছেন পাশাপাশি-
হুবহু স্পর্শ, হুবহু প্রেমের মত।
ভেবেছি তোমাকে,
যখন
হুবহু বৃষ্টির মত নেমেছে প্রেম,
স্তরে স্তরে, বাঁকে বাঁকে জমেছে পলি।
বিস্তৃত পাললিক মিথ্যাচারে,
ভোরের কৃষকেরা হেঁটে হেঁটে ঢুকে
পড়েছে রাত্রির নাভীমূলে।
-উড়ে যদি যাও তুমি কখনও আলতা মাখানো
বিড়ালিনীর বুকে চেপে,
অথবা
কবিজাত আর হাঁসপাখি যদি কাল থেকে পাশাপাশি
বসে অন্য কারো ডিম-এ দেয় তা,
এই যে সময়, অদ্ভুত বেশ;
কেটে যাবে রোজ, কাটছে যেমন –
জিভের বহরে,
নিখুঁত হাহাকারে।
যন্ত্র
ভেবে দেখলাম-
একটা সদাপ্রস্তুত টোস্টারের মত উষ্ণতা দিয়ে যাবো তোমাকে,
যখন, যেখানে, যেভাবে, যেমন।
– একজন ইলেক্ট্রনওয়ালী যুবতী এসে আমাকে বোঝালেন বাসাবাসি কাকে বলে।
তার কাছে আছে যৌবনসদৃশ কোমলতা,
প্রথম বৃষ্টির স্নিগ্ধ কাদার মত লাবণ্য।
– প্রচণ্ড পাখিময় আকাশে তুমি উড়ায়েছো ঘুড়ির উরু
ভীতিকর খাঁজে, বাঁকে বাঁকে;
কৌটোর ভেতরে,
চিরসবুজ পিকলের মতন
– অথবা তুমি হচ্ছো একটা সুদৃশ্য পানশালার মত।
পানশালার বাইরের দিকে দাঁড়াবেন কিছু বিশালাকৃতির মানুষ-
এরা শুধু অবাঞ্ছিত পানবিলাসীদের তুলে তুলে বাইরে ছুঁড়ে মারবেন।
তবে আমার কাছে
পোষ্য শিশুর জন্ম বিষয়ক বৈধতা যাচাইয়ের
প্রশ্ন নিতান্তই অবান্তর।
তার চেয়ে সদাপ্রস্তুত টোস্টারের মত উষ্ণতা বিলি করে যাই বরং।
ব্যথা ব্যথা লাগে, অথচ অগ্নির মত না-
ইঁদুরের মত গর্তপ্রীতি অবশ্য এক সময়
কৌটোর নীচের দিকে ফাটল ধরায়।
– ইলেক্ট্রনওয়ালী তখনো বাসাবাসির সংজ্ঞা কপচান;
– তবু টোস্টারের চেয়ে উষ্ণতাবিলাসী আর কোনো যান্ত্রিক
উপকরণের নাম আমার আর তৎক্ষণাৎ মনে পড়ে না।
তুমি শুয়েছিলে যেখানে –
একটা পুরনো শাড়িতে তুমি আসবাব মোছ, ঘর মোছ।
এই যে চেয়ার,
ছুঁয়ে গ্যাছে সে কত নিতম্বের মত-
কথার পিঠে, দীর্ঘ কি-চেইনে ঠুকঠাক;
উড়াইয়েছি আমাদের দাঁতগুলো ধোঁয়ার মাঝে।
তুমি নাড়ি কাটো, শাড়ি ছেঁড়ো।
গ্লাসের ভেতর হেসে ওঠা খিলখিল
আমার কন্যাদের মত মৌ-এর চাক ভেঙে বিছানার গায়ে
এই যে বালিশ,
উড়ায়ে এনে ফেলেছো কত ধুমকেতুর পিণ্ড,
কাচের গায়ে লেপ্টানো মগজে,
বাইরের দিকে শিশিরবিন্দুর মত আমার পরিচিত পুত্ররা।
তারপর একটা পুরনো শাড়িতে তুমি ঘর মোছ, আসবাব মোছ।
ছুঁয়ে গ্যাছে সে কত শরীরের বাঁক-
শৃংখল ভাঁজে,
চোখের ভেতর থেকে এনেছিল ধরে বিব্রত পোকা।
-যেখানে
আরেকটু ধোঁয়া মানেই পরাজয়,
নিভৃত উপসংহার,
তোমার খুব পরিচিত কোন পুরনো শাড়ির শেষ টুকরোর মত।
লিঙ্গুয়িস্ট এবং কম্পাস
প্রেমিকার সাথে ভাষাগত দূরত্বে কিছুটা
আদিমতা আছে;
আদিমতার মানে হতে পারে দুটো-
-এইখানে সুনীল পীড়ন সারণীতে তোমার
অবিকল খিলখিল ঝড়;
-অথবা নেয়ে আসা তুমি সন্ধ্যা বাগানে চায়ের রাতে।
হালকা বিরহে, সবুজ-এ, স্কার্ফ-এ মিশে হয়ে ওঠা তুমি
একটা বৈদেশিক সুখপিণ্ড।
যেমন
রেখেছি পেতে ইঁদুরের কল-
নেমে পড়েছি তালাশ-এ।
আমি কম্পাস-এ মেপে বাঁকা হয়ে দাঁড়াই,
-আমি তো দুরবিন দিয়ে প্রেম করি,
আমার তাকাতাকি অন্যরকম।
আমার চুলের চূড়াতে ঘর বোনে কেতাদুরস্ত আঁঠা,
অন্যান্য অস্ত্র আর আত্মিক গোলযোগ।
-উড়ে গ্যালে যাও, ফড়িং বসনে-
আবার দেখা হয়ে যেতে পারে
কোন পৌরাণিক তালাশ-এ
বয়স মাপার পঞ্জিকা,
দুরবিন-এ,
কম্পাস-এ।
হারপুন
তোমার
মননে বিষ আছে?
হারপুনে ধার?
-নক্ষত্রের বীজ বুনছে সবাই
বাস্তব অথবা কাল্পনিক ঘুড়ির জট
বিশুদ্ধ প্রোফাইল,
কারিক্যুলাম ভিটাই-
সিড়ি,
মই,
এলিভেটর।
মাথাগুলি সব নিভৃত জাদুঘর;
-কাচের ভেতরে বন্দী একটা গোল্ডফিসের দিকে তাকিয়ে
কিছু মৎস্যজীবী মানুষ,
হারপুন হাতে।
শরীরি
তুমি বলেছো, তাই অদ্ভুত সাইডওয়াক।
স্বন্ধ্যা,
ভোর,
অসময়গুলো গলে গ্যাছে দলা দলা লাইপিড-এ।
তবু ছুঁচালো শিশুচাঁদে রোদ দিয়ে যাবে তা।
ছাঁচা যৌবন ইউক্যালিপ্টাসের
সিলিকন বুকে খোদাইকাব্য,
পাড়ায় পাড়ায় বসাবে জ্যামিতিক যোগাসন।
তুমি তে ভূমি তে
তফাৎ গড়বে উর্বর বালিপিণ্ড।
আর
তুমি বলেছো বলে এই অদ্ভুত জলাধার;
চোখে, জিভে জল;
ছেয়ে গ্যাছে আজ থোকা থোকা লাইপিড-এ।
মেলানিন
তোমার ইন্দ্রিয়ের অতীত ছুঁয়ে গেলে
আমার প্রতিটি ইন্দ্রিয়ে,
-আমি
ভিজে গ্যাছি ঝাপসা মেলানিন-এ;
তুমিও তো মাতম তোল চাঁদের রাতে;
ওখানেও বাঁকগুলি বাওয়া যায়,
হেঁটে হেঁটে ফেলে রেখে
যাওয়া যায় পুংচোখা নিঃশ্বাস।
তুমি টেনে দিলে ভাঁজ জলের রং-এ,
আমি বাদামীতে নির্বাক হয়ে পড়ি,
ছবি এঁকে যাই দীর্ঘ গ্রীবায়,
হলদে ঘুমের গলিতে, দেয়ালের বুকে
টেনে যাই দাগ বৃন্তের মত করে।
-তুমিও তো শুয়ে থাকো চোখের পাতায়
হৃদয়ে তাক করে চন্দ্রবিন্দু;
পাহারায় আমাতে গড়ো জীবন্ত
লিটমাস পেপার, যেন-
ভিজে যাব আমি
তোমার জলে,
ধুমায়িত মেলানিন-এ।
ঘড়িয়াল বোধহয় ঘুমিয়ে
উল্টো এক জোড়া ব্যাটারির মত শুয়ে আছি আমরা,
কমে আসছে আধান-
ডার্টবোর্ডে আমি ছুঁড়ে মারি একটা তীর,
নিশ্চিত প্রাস এর মত করে;
দেয়ালে ফুঁটো বেড়ে যায় আরেকটা।
একদল বিভ্রান্ত দেহ ঘিরে ওৎ পেতে থাকেন একজন বায়োফিলিক টিকটিকি।
কিছু মৌলিক কলরব-
‘দুর্দান্ত ইলিশে ঝরে যায় ঘাম,
পুড়ে চলে সন্ধ্যা হলুদ চাদরে।’
শুধু পাশের ছাদের চিমনি গলে উড়ে যায় একগাল রঙিন ধোঁয়া,
কলাপাতা-সবুজ শাড়ির পেছনে হেসে যায়-
এঁটো মেঘে ইতস্তত ছায়া, কুয়াশা, ঋণ – এসব।
কালো দুপুরে অস্থির কিউবিকল,
ভৌতিক রিংটোন,
ঢাকা পড়ে না মাংসল স্ট্র্যাপ,
রং বদলায় বরং।
বেড়ে যায় আরেকটা ভাঁজ,
আঁচড় পড়ে যায় ইন্দ্রিয়বৃন্দে,
ঋণাত্বক রমণে।
—
ফুটোস্নাত হাঁটু নিয়ে কেন যেন আমি
ঘরের দিকে পা বাড়াই।
-বরং অদ্ভুত গড়িয়ে যাক সবুজ মার্বেল,
মেটে কার্পেটে-
জট পাকা ভ্রুণ, শুকনো পাতা, স্পিডব্রেকার-এ।
ঘুরেফিরে গর্ত খুঁজি,
ক’ফোটা সবুজ দর্শন কপচানো মুহূর্ত,
রসালো চিনিভরা চা-চামচ এ ছুঁড়ে মারি নিজেকে ধোঁয়ার ভেতর-
চেনা রঙের একঘেয়ে ধোঁয়া- চেনা জিভে, চেনা আচারে একটু একটু করে
আমি ধোঁয়া সরাই।
আমার ঘর,
সিঁড়ি,
দরজা,
চাবি।
-ঘরে ঢুকেই আমি
জুতো খুলে একজোড়া স্যান্ডেল পরি।
এখনও লিপিকার
এখানে বার্ষিক গতি এসে আমাকে
মাঝে মাঝে যন্ত্রণা দেয়।
প্রকৃতি আমার সাথে মহাপুরুষদের মত আরামদায়ক থাকে না।
খুব গোড়া থেকে বংশলতিকা খুঁটে খুঁটে দেখেছি আমি,
শুনেছি এ বংশে কোন লিপিকার ছিলেন না।
আমি বরং ক্যাঁকটাই সমুদ্র সাঁতরে উঠব
প্রাণহীন রক্ত-মরুতে,
পোড়া স্তনবৃন্তে রাখবো পোড়া চোখ।
শীত ভোরে সুখঘুম,
আমিকেন্দ্রিক শুক্রবার,
আর ব্যর্থ যুগল-এ অযথা ঘাম শেষে
গল্পের ওপারে যাবো একদিন-
সাথে যাবে দলে দলে পোড়া স্তন।
আমি পূব-পশ্চিম চিনি নাই,
শাকাসী হতে পারি নাই।
লিপিকার বলে গ্যাছেন-
“কিছু বটাতে হলে কিছু রটাতে হয়।”
-আমি মুগ্ধ হই নাই-
বিষেল দংশন কাব্য,
আর আলোকিত পরী বৃত্তান্ত
পেরিয়ে আমি বিব্রত বা বিভ্রান্ত হই।
অযথা প্রেম জাগে এক জোড়া পোড়া স্তনে।
আমি বরং ভুলে বলে ফেলি-
“আমি লিখতে পারি না;
কিন্তু মুছতে পারি।”
রেইস
অস্থির
শাদা কৌণিক আলোতে বসেছে সন্ধ্যা,
বিমূঢ়, চুপসানো
টি-ব্যাগ থেকে খসে পড়েছে হাইহিল।
টালিখাতা হাতে
জনকয়েক মাংশাসী গাধা মত্ত জ্ঞানপ্রলাপে;
প্রগাঢ় ইন্দ্রিয়বৃন্দ, ঢিমেতালে পড়েছে শুয়ে পশ্চিমে।
প্যাট্রিআর্কাল ঘ্যাঁগর ঘ্যাঁগর-এ
চুরি যাক এবার
মাঠভরা যৌনতা,
বিস্তৃত সুখ,
চন্দ্রস্নাত ওষ্ঠ।
বিভ্রান্ত পিঁপড়েরা হেঁটে যাক
ছুঁয়ে ছুঁয়ে
এক ওষ্ঠ থেকে আরেক ওষ্ঠে-
পরিচিতদের মত করে।

[রঙ্গন সামাদী– জন্ম ১৯৮৪, ঢাকা, বাংলাদেশ। তথ্যপ্রযুক্তিবিদ। স্যাসকাচুয়ান নিবাসী। – নয় নাম্বার বাসের হেল্পারগণ]