ত্রিস্তান জাঁরা তর্জমা – মাহীন হক

ত্রিস্তান জাঁরা ১৯২১ (সূত্রঃ https://www.metmuseum.org)

অবোধের তিনখানা কান্দন

যেইখানে আমরা থাকি ওইখানে ঘড়িগুলার ফুলে আগুন ধইরা যায়

আর তার শিখা উজ্জ্বলতারে ঘেরাও কইরা রাখে

গন্ধকমেশানো সকালে দূরের গরুগুলা সল্ট-লিলি চাটে

পোলা আমার!

পোলা আমার!

দুনিয়ার এই রঙবদলের মধ্য দিয়াই আমাগো চলতে হইব,

যারে মাটির তলের রেললাইন বা জ্যোতির্বিদ্যার চাইতেও নীল দেখায়।

আমরা বেশিই শুকনা

আমাগো কোনো মুখ নাই

আমাগো পা শক্ত আর একলগে লাগানো

আমাগো চেহারা তারাগুলার মত নিরাকার

কতগুলা শক্তিহীন স্ফটিক বিন্দুর জ্বলন্ত রাজপ্রাসাদ

পাগল: আঁকাবাঁকা ফাটল

টেলিফোন

তরলকৃত জালিয়াতি কামড়াইয়া ধরো

ধনুক

আরোহণ

তারাময়

স্মৃতি

এর দ্বিগুণ ফলের মাঝ দিয়া উত্তরের দিকে

কাঁচা মাংসের নাহান

ক্ষুধা আগুন রক্ত


সব্জি চড়ুই

আমার আবেগঘন শিশুচক্রের
দিকে দুইটা হাসি আইসা মিলে
রক্তমাংসের ভৌত কিংবদন্তি জীবনে
বানানো প্রাণীগুলার রক্তাক্ত বোঝা

দুরন্ত হরিণের পদধুলায় মেঘের ঝড়
বৃষ্টি পড়ে কালা নাপিতটার
কাচিগুলার নিচে আইসা–
প্রচণ্ড রাগে সাংঘর্ষিক ছন্দের
নিচে সাঁতার কাটতে কাটতে

মেশিনটার ভেতর সার দেয়া ঘাস
তীক্ষ্ণ চোখে চারপাশে বাইড়া ওঠে
এইখানে আমাগো ভাগের আদর
মৃত আর বিগত, ঢেউয়েদের সাথে

চুলেদের মধ্যদুপুরে বিভক্ত হইয়া
নিজেরে মহাকালের হাতে সমর্পণ
না আমাগো হাতে কোনো আঘাত
মানবীয় আনন্দের যত মশলাপাতি


একটা দাদাইস্টের গান

এইটা একটা দাদাইস্টের গান যার
অন্তরে ছিল দাদা
সে ছিঁড়া ফেলসিলো তার মটোরটা
তার অন্তরে ছিল দাদা

একটা রাজারে টাইনা তুললো লিফট্‌টা
সে ছিল এক ভাঙাচুরা মেশিনের দলা
হাড্ডিসহ সে তার ডান হাতটা কাইট্যা
পোপের কাছে পাঠাইয়া দিলো রোমে

সেইজন্যই পরে
লিফট্‌টার অন্তরে ছিল না আর দাদা

চকলেট খাও
মগজটা ধোও
দাদা
দাদা
গিল্যা নাও একটু বৃষ্টি
এইটা একটা বাইসাইক্লিস্টের গান
যে শুরু থিকাই ভালোবাসতো দাদা
কাজেই সেও ছিল এক দাদাইস্ট
তাদেরই মত, যাদের অন্তরে আছে দাদা

কিন্তু তার স্বামী নিউ ইয়ারের দিন
জাইনা গেলো সব আর ঝামেলার সময়
তখনই তাদের দুইটা দেহ দুইটা স্যুটকেসে
পাঠাইয়া দিলো ভ্যাটিকানে

না সেই বাইসাইক্লিস্ট
না সেই ব্যাটা হইসিলো
আর কখনো সুখী কিংবা দুখী

পান করো কিছু পাখির দুধ
ধুঁইয়া নাও মিষ্টিগুলা
দাদা
দাদা
খাইয়া নাও তোমার মাংস


মোর বিমূর্ত চিত্তের সিনামা পঞ্জিকা – ০৯

সুতাগুলা তোমার তারাময় উষ্ণতার কাছে হার মানে

একটা ল্যাম্পরে বলা হয় সবুজ আর সেও দেখতে পায়

সাবধানে জ্বরের মৌসুমে পা রাখে

বাতাসটা নদীর যাদু উড়াইয়া নিয়া গেসেগা

আর আমি স্নায়ুটারে ফুটা করসি

জইমা যাওয়া স্বচ্ছ দীঘিটার পাড়ে

তলোয়ার গেলো ভাইঙ্গা

মাগার গোল সোপান টেবিলে নাচ

মার্বেলের কাঁপুনির চোটে বন্ধ হইয়া যায়

নতুন গাম্ভীর্য


একখান দাদাইস্ট কবিতা লেখতে

একখান নিউজপেপার লও।

একখান কাচি লও।

তুমি যতখানি লম্বা কবিতা লিখতে চাও

ওই পেপার থিকা ততখানি লম্বা একটা আর্টিকেল চুজ করো।

ওইটুকু কাইট্যা নাও।

তারপর খুব সাবধানে ওই আর্টিকেল হইতে প্রতিটা শব্দ কাইট্যা নিয়া একটা ব্যাগে হান্দাও।

আস্তে-ধীরে ব্যাগটা ঝাকাও।

এরপর একটা একটা কইরা টুকরাগুলা বাইর করো।

প্রতিটা শব্দ এক এক কইরা সাজাও।

কবিতাটা তোমারেই প্রকাশ করবে।

আর তখন তুমি হইবা একটা সুন্দর সংবেদনশীল কবিতার

পুরাপুরি মৌলিক লেখক,

যদিও তার মূল্য ওই অশ্লীল ভেড়ার পাল বুঝবে না।


মাহীন হক – কবি, পাঠক, অনুবাদক। মিরপুরে বাস করেন। দশম শ্রেনীর ছাত্র।

এখানে আপনার মন্তব্য রেখে যান